ফ্রিল্যান্সিং কি ?
ফ্রীলান্সিং বলতে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে স্বাধীন ভাবে কাজ করাকে বোঝায়। আউটসোর্সিং বলতে আমরা বুঝি অন্যের হয়ে কাজ করাকে। তবে ফ্রীলান্সিং ও আউটসোর্সিং কে আমরা একই অর্থে ব্যবহার করতে পারি। সাধারণত অনলাইনেই ফ্রীলান্সিং বা আউটসোর্সিং এর কাজ করা হয়।
ফ্রিলান্সিং করার যোগ্যতা কি?
ফ্রীলান্সিং করতে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার চাইতে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনি যে কাজটি করবেন সেটাতে আপনার দক্ষতা কেমন সেটা। যেমন ধরেন, আপনি যদি ওয়েব ডিজাইনের কাজ করতে চান তাহলে আপনাকে ওয়েব ডিজাইনে দক্ষ হতে হবে, আপনি যদি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশান ডেভেলপমেন্টের কাজ করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশান ডেভেলপমেন্টে দক্ষ হতে হবে ।
কাজ নেয়ার পরে শেখার সুযোগ এখানে খুব কম। কারণ, যে বাক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপনাকে কাজটি দিবে, সে কাজটি ভালো জানে এরকম লোক কেই দিবে। আর একটি জিনিস, আপনাকে বিদেশি কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগের জন্য ভালো ইংলিশ বলতে ও বুঝতে পারতে হবে।
ফ্রীলান্সার হিসেবে কি ধরনের কাজ করা যায়?
অনলাইনে ডেলিভারি দেয়া সম্ভব এরকম যে কোন কাজই করা যায়। যেমন – ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশান ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশান ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ফটোশপ এর কাজ, ইন্টারনেট বিপণন/ইন্টারনেট মার্কেটিং, ডাটা এন্ট্রি করণ, লেখালেখি ও অনুবাদ ইত্যাদি।
কিভাবে ফ্রীলান্সিং শুরু করবেন?
ফ্রিলান্সিং শুরু করতে হলে আপনাকে অবশ্যই অনলাইনে করা যায় এরকম কোন একটি কাজের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আপনার যদি কোন অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে কোন ট্রেনিং সেন্টারে ট্রেনিং নিতে পারেন। আপনি যখন নিজেকে কাজ করার জন্য উপযুক্ত মনে করবেন তখন আপনার কাজ খোঁজার পালা।
কাজ কোথায় পাওয়া যায়?
ফ্রিলান্সিং এর কাজ আপনি ঘরে বসেই বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে খুঁজতে পারবেন এবং অনলাইনেই ডেলিভারি দিতে পারবেন। অনলাইন মার্কেটপ্লেেসের মধ্যে www.upwork.com, www.freelancer.com, www.guru.com, https://www.peopleperhour.com উল্লেখযোগ্য।
যেকোনো মার্কেট প্লেসে আপনি আপনার প্রোফাইল তৈরি করে কাজ খুঁজতে পারবেন। তবে www.upwork.com দিয়ে শুরু করায় ভালো।
কাজ পেতে করণীয় কি?
আর দশটা কাজের মত ফ্রিলান্সিং এও শুরুটা একটু কঠিন। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রথম দিকে একটু ধৈর্যশীল হতে হবে। যে কাজ গুলো আপনার দক্ষতার সাথে বেশি যায় সেগুলোতে অ্যাপ্লাই করতে থাকুন। নতুন হিসেবে আপনি অবশ্যই একটু কম রেটে ছোট কাজে বেশি বিড করবেন। কিছু কাস্টমার আছে যারা অল্প খরচে কাজ করাতে চাই, কম রেটে বিদ করলে তারা আপনাকে কাজ দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হবে। কিছু কাজ করার পর আপনার প্রোফাইল যখন ভালো হবে তখন বেশি রেটে কাজ করতে পারবেন।
একজন ভালো ফ্রীলান্সার হতে করণীয় কি?
ভালো ফ্রিলান্সার হতে গেলে আপনাকে অবশ্যই আপনার নেয়া কাজটি খুব ভালোভাবে করতে হবে এবং সময় মত ডেলিভারী দিতে হবে। আপনার কাজের কোয়ালিটি আপনার হয়ে কথা বলবে। আপনি যখন একটি ভালো কাজ ডেলিভারী দিবেন তখন ক্লাইন্ট আপনাকে ভালো ফিডব্যাক+রেটিং দিবে আর ক্লাইন্টের ফিডব্যাক+রেটিং আপনার পরবর্তী কাজ পেতে সহায়ক হবে। এভাবে যখন আপনার প্রোফাইলে অনেক ভালো ফীডবাক+রেটিং+আরনিং থাকবে তখন দেখবেন ক্লাইন্ট আপনাকে খুজে নিচ্ছে।
ফ্রিলান্সিং এ কেমন আয় করা সম্ভব?
ফ্রিলান্সিং এ আয় এর কোন লিমিট নেয়। আপনার দক্ষতার আর পরিশ্রমের উপর নির্ভর করবে আপনি কত আয় করবেন। যেমন ধরেন একজন ভালো ওয়েব অ্যাপ্লিকেশান ডেভেলপার মাসে ২-৩ লক্ষ টাকা ও আয় করতে পারে।
ফ্রিলান্সিং এর সুবিধা কি?
ফ্রিলান্সিং এর প্রধান সুবিধা হল মু্ক্তভাবে কাজ করা যায়। অফিসের মত ধরা বাধা নিয়ম নেই এখানে। আপনি আপনার পছন্দ মত সময়ে কাজ করতে পারবেন এবং যে কোন জায়গা থেকেই করতে পারবেন। দরকার শুধু আপনার ল্যাপটপ আর ভালো একটা ইন্টারনেট কনেকশন।
লেখকঃ
মোঃ মিজানুর রহমান সরকার
সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
Secure Link Services Limited BD
সাধারণ সম্পাদক
বাগমারা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশান, বাগমারা, রাজশাহী