রবিবার , ৭ আগস্ট ২০১৬ | ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ফের ঝাঁকে ঝাঁকে বাসা বেধেছে পাখিরা।

Paris
আগস্ট ৭, ২০১৬ ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের বাগান ও পোস্টাল ট্রেনিং সেন্টার বাগানে গত প্রায় ৭ বছর ধরে বিভিন্ন জাতের পাখি এসে বাসা বাধছে। বাগানের মেহেগুনি, জাম কৃষ্ণচুড়ার গাছে আশ্রয় গড়ে আসছে সাদা বক, পানকৌড়ি, রাজচোরা, বালি হাঁস জাতের শতশত অতিথি পাখিরা।
পাখিগুলো মার্চ মাসের দিকে এখানে এসে আশ্রয় গড়ে। এরপর বাসা করে সেখানেই বাচ্চা তোলে। বাচ্চা একটু বড় হওয়ার পরপরই কিছু দিনের মধ্যে তারা আবার চলে যায়। Rajshahi photo-25-06-16-12 copyখাবার সংগ্রহ, বাচ্চা জন্ম দেওয়া ও নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দূর-দূরান্ত থেকে আসে এসব পাখিগুলো। এরা আমাদের পরিবেশের যেমন ভারসম্য রক্ষা করে, তেমিন পদ্মাপারের সৌন্দর্য বর্ধনও করে।

  • কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কারারক্ষীরা এবং কারা কর্মকর্তারাও এসব পাখি শিকার করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে গত বছর পাখি সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে যায়। অনেক পাখি ভয়ে পালিয়েও যায়। কিন্তু এ বছর ফের ঝাঁকে ঝাঁকে এসে বাসা বেধেছে পাখিরা।

তবে এবারও কী পাখিগুলো নিরাপদ আশ্রয়া পেল না? এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন প্রাত:ভ্রমনে বের হোন-এমন ব্যক্তি আজিজুল পারভেজ। একসময়ের সরকারি এ চাকরিজীব আক্ষেপ করে বলেন, ‘এই পাখিগুলোর আমরা আশ্রয় দিতে পারি না। এটা আমাদের জন্য লজ্জাকর। আমারা তাদের ধরে ধরে মাংস খায়। কত বেকুব মানুষ না হলে আমরা এগুলো শিকার করি?’
আরেক ব্যক্তি মাজিদুর রজমান বলেন, এখানে সরকারি লোকজনই এই পাখি শিকারের বেশি মাতোয়ারা হয়ে উঠে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই আর কেউ সাহস পাবে না পাখি Rajshahi photo-25-06-16-6 copyশিকারে। তাহলে প্রতি বছর এখানে হাজার হাজার হাজার পাখি এসে আমাদের রাজশাহীর সৌন্দর্যবর্ধন করবে। পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা করবে। আমাদেরও প্রাণ জুড়িয়ে যাবে তাদের দেখে-যেমনটটা এখন হচ্ছে।

  • স্থানীয় পান-সিগারেট ব্যবসায়ী সিরাজ সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘পাখিগুলোকে মূলত আমিই পাহারা দেয়। যখন একা থাকি, তখন ওদের সঙ্গে নিজে নিজেই কথা বলি। মনটাও ভালো হয়ে তখন। আবার আর সেই পাখিগুলোকেই কেউ যখন মারতে আসে, তখন মনটা আরো খারাপ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই পাশেই অবস্থিত পুলিশ অফিসার্স মেসে খবর দেওয়া হলে তারা এসে পাখি শিকারীদের তাড়িয়ে দেয়।’ কিন্তু আমি না থাকলেই পাখিগুলো অবাধে শিকার করা হয়।’

পুলিশ অফিসার্স মেসের এক কনস্টেবল নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘পাখিগুলোর কিচির-মিচির শব্দ শুনতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু যখন ওদের শিকার করা হয়, তখন মনের মাঝে খারাপ লাগে।’

  • রাজশাহীর পদ্মা নদীর তীরঘেঁষে অবস্থিত পোস্টাল ট্রেনিং সেন্টারে গতকাল সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ছাঁয়াঘেরা পরিবেশে শত শত সাদা বক, পানকৌড়ি, রাজচোরা ও বালি হাঁস জাতের শতশত অতিথি পাখিগুলোর কিচির-মিচির শব্দে এলাকার পরিবেশেই যেন আলাদা একটি মাত্রা যোগ হয়েছে। নেই যানবাহনেরও তেমন কোনো শব্দ। শুধু পাখিদের গানে ভরে উঠেছে পোস্টাল ট্রেনিং সেন্টার।

Rajshahi photo-25-06-16-5 copy
পোস্টাল ট্রেনিং সেন্টারের পাশেই অবস্থিত কারারক্ষীদের আবাসস্থল। এখানকার প্রায় ৩৫ বছর বয়স্ক এক নারী নিজের নাম প্রকাশ না করেই বলেন, ‘এই পাখিগুলো দেখতে সুন্দর বলে প্রতিদিন অনেক লোক আসে এখানে। কেউ আসেন ছবি তুলতে, আবার কেউ আসেন পাখি দেখতে। তাই এদের সংরক্ষণে আমাদের এগিয়ে আশা উচিত।

তিনি বলেন, এমনিতেই সব সময় বিনোদনপ্রেমী মানুষরা এখানকার পদ্মা পাড়ে এসে ভীড় জমায়। কিন্তু বিদেশী এই পাখিগুলো দেখার জন্য বছরের মার্চ মাস থেকে প্রায় চার মাস মানুষের ভিড় আরো বেড়ে যায়। বিনোদনপ্রেমীদের সঙ্গে যোগ হয় পাখিপ্রেমীরাও।‘

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর