পুঠিয়া প্রতিনিধি:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় পেঁয়াজের বীজ চাষে সফলতা অর্জন করেছেন নাজমুল হক। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে মাত্র ১৫/২০ দিনের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ টাকার পেঁয়াজ বীজ ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। তবে শেষ মূহুরতের আশা করছেন তিনি। যদি অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটে যায় তাহলে লক্ষ লক্ষ টাকার বীজ নষ্ট হয়ে যাবে। নাজমুল হক পুঠিয়া সদর ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামের মৃত আজিজুল হকের ছেলে। তারাপুর বাজার সংলগ্ন চার বিঘা জমিতে এবার পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছেন। কোন রকম পরামর্শ ছাড়াই নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের সাথে জড়িত। ২ কাঠা জমি লিজ নিয়ে সর্বপ্রথম পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন শুরু করেন। ফলন ভালো পেয়ে আবাদের জমি বৃদ্ধি করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ৪ বিঘা জমিতে বীজ উৎপাদন করছেন।
তবে আগামীতে ১০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বিজ উৎপাদন করবেন বলে জানিয়েছেন ক…ষক নাজমুল হক। এবার ফলন
ভালো হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে ১২০ কেজি থেকে ১৫০ কেজি হারে বীজ উৎপাদন হতে পারে। সে হিসেবে ৪ বিঘা জমিতে প্রায় ৬ শ কেজি বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
জমি লিজ নেয়া বাদে চার বিঘা জমিতে বীজ উৎপাদন করতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। চলতি মৌসুমে তিনি প্রায় ১০ লক্ষ টাকার পেঁয়াজের বীজ বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন। ̄
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর পর পেঁয়াজের ফুলকি হয় সেই ফুলকি আরো বড় হয়ে কদম তৈরি হয়। স্থানীয়দের ভাষায় ফুলকির মাথায় থাকা পেঁয়াজের ফুলকে কদম বলা হয়। পেঁয়াজ লাগানোর পর মাত্র ৬ মাসের মাথায় এ ফসল ঘরে তোলা হয়। তবে এর পরিচর্যা
করা খুব কঠিন।
স্থানীয় চাষী হাসেম আলী জানান, কদমে যত বেশি মৌমাছি বসবে কদমের তত বেশি ফলন
হবে। এবার অন্যান্য বারের চেয়ে অনেক বেশি মাছি বসেছে। বিকেলে জমিতে এলে মনে হয় মৌমাছির চাক বসেছে।
ফলে অন্য বারের চেয়ে এবার কদমের ফলনও অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারাপুর বিলে কথা হয় কদম চাষী
নাজমুল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, অন্যান্য ফসলের থেকে কদম চাষ অনেক বেশি লাভজনক। এক বিঘা জমি থেকে
সর্বচ্চ ১৫০ কেজি বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রতি কেজি বীজ গতবার বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে এবার পেঁয়াজের বীজের দাম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, কদম চাষ লাভ জনক হলেও এর পরিচর্যা করা অনেক কঠিন কাজ, একটি শিশু ভুমিষ্ঠ হওয়ার পর মা যেমন শিশুটিকে লালন পালন করে বড় করে তেমনি রোপনের শুরু থেকে উত্তোলন করা পর্যন্ত এর যত্ন নেয়া লাগে। নিয়মিত পরিচর্যা না করলে পোকার
আক্রমন দেখা দেয়। এর জন্য নিয়মিত ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করতে হয়।
স্থানীয় অফিসের কেমন পরামর্শ পেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের কাছে পরামর্শ চাইতে গিয়ে কয়েকবার পরামর্শ না পেয়েই ফিরে এসেছি। আমি ১৫ বছর ধরে এ বীজ উৎপাদন করছি। ফলে নিজেরইএকটা অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে। সেই অভিজ্ঞতার আদলে কদম চাষ করছি। কদম চাষী নাজমুল হক বলেন, আর মাত্র ১৫/২০
দিনের মধে ̈ই আমি বিজ ঘরে তুলতে পারবো। তবে যদি শিলাবৃষ্টি হয় তাহলে একটি বীজও ঘরে তুলতে পারবো না।
তাই আকাশে মেঘ দেখলে বা মেঘের গর্জন শুনলেই চমকে উঠি।
তবে পুঠিয়া উপজেলা কৃষি সম্পধসারন অফিসার কামরুল ইসলাম জানান, এবার উপজেলায় মোট ৭৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বিজ উৎপাদন হয়েছে। প্রতিদিনের আবহাওয়ার খবর কৃষকদের আগাম জানিয়ে দেয়া ছাড়াও উপজেলায় সকল পেঁয়াজের বীজ চাষীদের
বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
স/শা