নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর আত্রাইয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় দেড় হাজার বিঘা জমির আমন ধান। গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত আর উত্তরের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে এই ধানগুলো তলিয়ে গেছে।
গত বছরের বন্যায় শুধু কৃষি খাতেই ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া উপজেলায় ওই বছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, এবার পানি নেমে গেলে ধানের খুব বেশি ক্ষতি হবে না, কিন্তু কৃষকেরা বলছেন, পানিতে ডুবে যাওয়া ধান পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে আত্রাই উপজেলায় ৬ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করেছেন কৃষকেরা। এর মধ্যে গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত এবং উত্তরের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়নের হেঙ্গলকান্দি, মাঝগ্রাম, পৈসাওতা, জগনাথপুর, দমদত্তবাড়ীয়া, নৈদীঘিসহ বেশ কয়েকটি মাঠের রোপণকৃত ধান পানিতে তলে গেছে।
তবে নদীর পানি কমতে থাকায় মাঠের পানিও কিছুটা কমে যাচ্ছে। এতে দ্রুত আক্রান্ত ধানগুলো সেরে ওঠবে বলে আসা কর্মকর্তাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত বছরের বন্যায় উপজেলায় প্রায় ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এর মধ্যে ১০ হাজার ৮৯৭ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শুধু মাত্র কৃষি খাতেই প্রায় ৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
বাহাদুরপুর গ্রামের কৃষক মেছের আলী বলেন, চলতি মৌসুমে ৭ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছিলেন। কিন্তু বন্যার পানিতে সব ধান ডুবে গেছে। একই গ্রামের কৃষক সাজেদুল ইলামের ৫ বিঘা, আবুল হোসেনের আড়াই বিঘা, হেঙ্গলকান্দি গ্রামের রুবেল চৌদুরীর ২৫ বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে।
দমদত্তবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক খায়রুল খন্দকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছেন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ধান রোপণ করেছেন। বন্যার পানিতে সব ধান ডুবে গেছে। এতে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত বছরের বন্যায় প্রায় ৪৫ বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। তবে পানি নেমে গেলেও ধান পাওয়ার আর আসা দেখছেন না বলে জানান কৃষকেরা। এসব ক্ষতি কাটাতে সরকারের নিকট সহায়তা কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিত কুমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্রায় ১১৯৩ বিঘা জমির ধান পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। তিনি দাবি করেন, পানি নেমে গেলে ধান আবারও অনেকটায় স্বাভাবিক হতে পারে। এতে তেমন ক্ষতি হবে না।