সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় পুলিশি অভিযানে জেএমবি নেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে নিহত দুজনের মধ্যে একজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
ফজলে রাব্বি নামে এই তরুণের বাড়ি যশোর বলে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
তিনি শনিবার রাতে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার একটি জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে রাব্বির পরিচয় জানা গেছে। গুলশান হামলার পর যশোর পুলিশ নিখোঁজ যে পাঁচজনের ছবি দিয়ে পোস্টার ছাপিয়েছিল সেখানে ২ নম্বরে রাব্বির ছবি ছিল।
এই অভিযানে নিহত অন্যজন ঢাকার ধানমণ্ডির তাওসীফ হোসেন বলে তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছেন মনিরুল ইসলাম। তবে তার পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
ধানমণ্ডির ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ডা. মো. আজমলের ছেলে তাওসীফ গত মার্চে ঘর ছাড়েন।
গুলশানের ক্যাফেতে হামলা চালিয়ে নিহত নিবরাজ ইসলাম, শোলাকিয়ায় হামলার পর পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত আবীর রহমান এবং কল্যাণপুরে পুলিশি অভিযানে নিহত শেহজাদ রউফ অর্কও একই সময়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন বলে তাদের পরিবারের ভাষ্য।
গত ১ জুলাই গুলশানের ক্যাফেতে হামলার আগে ঢাকার এই চার তরুণই ঝিনাইদহের একটি মেসে ছিলেন বলে জুলাইয়ের শেষদিকে জানিয়েছিলেন জঙ্গি-তদন্তে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তারা সে সময় বলেন, এই চারজনসহ মোট আটজন ওই মেসে থাকতেন এবং তারা সবাই গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় জড়িত ছিলেন বলে তাদের ধারণা।
তাওসীফের ফুপাত ভাই আহমেদ শাম্মুর রাইয়ান একবার আইএসে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। স্কলাসটিকার সাবেক ছাত্র শাম্মুর মালয়েশিয়ায় পড়তেন, যে দেশটিতে নিবরাজও পড়তেন।
অপরদিকে যশোর এমএম কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ফজলে রাব্বি গত ৫ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ বলে তার পরিবারের ভাষ্য।
রাব্বির বাবা হাবিবুল্লাহ ৭ এপ্রিল ছেলের নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে স্থানীয় থানায় একটি জিডি করেন।
উপ-শহর ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ সে সময় সাংবাদিকদের বলেন, তার ছেলে ছাত্রত্ব বাতিল করতে কলেজে আবেদন করেছিল। যশোরের কিসমত নওয়াপাড়ায় রাব্বিদের বাসা।
শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়া কবরস্থানের কাছে তিন তলা একটি ভবন ঘিরে পুলিশের অভিযান চলে। এক ঘণ্টার মধ্যে ‘অপারেশন হিট স্ট্রং টোয়েন্টি সেভেন’ শেষ হয় বলে পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক জানান।
পরে সেখান থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়, যাদের মধ্যে ‘নব্য জেএমবি’র নেতা তামিম চৌধুরী রয়েছেন বলে দুপরে পুলিশ জানায়।
গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তামিমকে চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা ছিল।
পুলিশ বলছে, নারায়ণগঞ্জের এই বাড়িটি মাসখানেক আগে তামিমরা ভাড়া নিয়েছিলেন।অভিযানের পর পুলিশ প্রধান শহীদুল হক বলেন, জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেই সুযোগ তারা গ্রহণ না করে পুলিশের দিকে গ্রেনেড ও গুলি ছোড়ে। তখন পুলিশ অভিযানে যায়।
অভিযানে অংশ নেওয়া গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জঙ্গিরা প্রচুর গুলি ছুড়ছিল, কল্যাণপুরের চেয়েও এখানে গুলি ছুড়েছিল বেশি। তারা ছয়টি গ্রেনেড ছুড়েছিল।”
সূত্র: বিডি নিউজ