এর আগে গতকাল সোমবার (২৭ মার্চ) এ মামলাটির যুক্তিতর্ক ও শুনানির দিন ধার্য ছিল। এদিন আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। এতে আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান। আজ তাদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়।
দণ্ডিত মো. সোহাগ জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার ঢুলিয়া মোল্লাপাড়ার আবদুল করিমের ছেলে, মো. সাগর একই গ্রামের মো. নিজামের ছেলে এবং ১০ বছরের কারাদণ্ড হওয়া নাবালকের বাড়িও একই এলাকায়। ২০১৬ সালে ঘটনার সময় সোহাগের বয়স ছিল ২২ বছর ও সাগরের বয়স ছিল ২০ বছর।
নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি মামলার বরাত দিয়ে জানান, ২০১৬ সালে জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার একটি গ্রামে ১০ বছর বয়সী এক কন্যা শিশু স্থানীয় মাদরাসায় জলসা শুনতে যায়। সেখান থেকে আসামিরা তাকে অপহরণ করে বিলের মধ্যে নিয়ে যায়। এসময় সঙ্গে থাকা অন্য মেয়েদের চিৎকারে উপস্থিত লোকজন বিলে গিয়ে তাৎক্ষণিক ওই শিশুকে উদ্ধার করেন।
পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর মা নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সোহাগ, সাগর ও রনিকে অভিযুক্ত করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বড়াইগ্রাম থানাকে তদন্তের দায়িত্ব দেন আদালত। মামলাটি তদন্ত শেষে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরে মামলাটি বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালে এলে আটজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্যপ্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আজ ওই তিনজনকে এই দণ্ডাদেশ দেন।
তিনি আরও জানান, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বিচার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এবং ১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রনির বিচার শিশু আদালতে হয়েছে। কেননা অভিযুক্ত রনি নাবালক হওয়ায় তার বিচার শিশু আদালতে হয়েছে।
দুটি আদালতেরই বিচারক ছিলেন মুহাম্মদ আবদুর রহিম। একই বিচারক হওয়ায় তিনি একসঙ্গে রায় দিয়েছেন। রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং জরিমানার টাকা ভুক্তভোগী শিশু পাবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।