চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নওগাঁয় সবধরণের আলুর দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। দাম বাড়ায় বেচাকেনা অনেকটা কমে গেছে। আলুর দাম বাড়ায় ভোগান্তী বেড়েছে নি¤œ আয়ের মানুষের। বাজার তদারকির দাবী জানিয়েছেন ভোক্তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমি থেকে ৩ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় ৬টি হিমাগার রয়েছে যেখানে ধারণক্ষমতা ৪৬ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। তবে এর বিপরীতে হিমাগারে সংরক্ষন হয়েছে ৩৬ হাজার ১৬০ টন।
ধারণক্ষমতার কমার কারণ হচ্ছে- এ বছর আলু আবাদে আবহাওয়া অনুকুলে ছিলোনা। এ কারণে মৌসুমের শুরুতে (২৮-৩০ টাকা) দাম কিছুটা বেশি থাকায় কৃষকরা বিক্রি করেছেন। আবার আলু পরিপুষ্ট হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে তুলে ফেলেছেন। এতে করে আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। ভাল দাম পাওয়ায় অনেকে হিমাগারে সংরক্ষণ করেননি।
নওগাঁ পৌর পাইকারি বাজারে গত ১৫ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে দেশী বড় আকারে আলু ৬৪-৬৫ টাকা, আকারে একটু ছোট ৫৮-৬০ টাক এবং কাটিনাল/স্টিক ও ডায়মন্ড আলু ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা পর্যায়ে দেশি আলু ৭০ টাকা ও কাটিনাল ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আলুর দাম বাড়ায় ভোগান্তী বেড়েছে নি¤œ আয়ের মানুষের। আয়ের সাথে সামঞ্জস্য না থাকায় বাজারে গিয়ে দিশেহারা তারা। অনেকেই আলু কেনা ছেড়ে দিয়েছে। দাম আরো বাড়লে ভোগান্তীর কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
চকবালুভরা গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন- ১০ কাঠা জমিতে দেশি জাতের আলুর আবাদ করেছিলাম। আবাদে খরচ পড়েছিল প্রায় ৬ হাজার টাকা। বৃষ্টির কারণে অনেকটা নষ্ট হয়েছে। তারপরও ২ মন আলু পেয়েছি। এখন বাজার থেকে ৬৫ টাকা কেজি আলু কিনে খেতে হচ্ছে।
সুলতানপুর মহল্লার বাসীন্দা মোজ্জাম্মেল হোসেন বলেন- গত দুই সপ্তাহ আগে ৭ কেজি কাটিনাল আলু কিনেছিলেম ৪৮ টাকা কেজিতে। এখন ওই আলু কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। আলুর দাম বাড়লে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত সবার জন্য সমস্যা হবে। বাজার মনিটরিংয়ের দাবী জানান তিনি।
পৌর পাইকারি বাজারের আলু ব্যবসায়ি আনিছুর রহমান বলেন- গত কয়েকদিন থেকে বৃষ্টিতে অন্যান্য শাক-সবজি নষ্ট হওয়া বাজারে সরবরাহ কমেছে। এছাড়া কয়েকটি জেলায় বন্যা হয়েছে। এতে আলুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কেজিতে দাম বেড়েছে ২-৩ টাকা। তবে আলুর দাম বাড়ায় বেচাকেনা অনেকটা কমে গেছে। আগামীতে আরো দাম বাড়তে পারে।
নওগাঁ জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার বলেন- মৌসুমের শুরুতে আলুর ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকরা আগেই বিক্রি করেছেন। এছাড়া উৎপাদনের পরিমাণও কমেছে। একারণে হিমাগারে প্রায় ১০ হাজার টন আলু কম সংরক্ষণ হয়েছে। তবে দাম ভাল পাওয়ায় আবার হিমাগার থেকে আলু বের হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার টন আলু বের হয়েছে। তবে আলুর দাম কিছুটা বেড়েছে। বাজার নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। প্রয়োজনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।