সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক
ঈদ-পরবর্তী মে মাসে দেশের ভেতরে ও বাইরে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হোঁচট খেয়েছে। গত এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে ক্রেডিট কার্ডে সার্বিক লেনদেন কমেছে ২.৭৬ শতাংশ। এ সময়ে দেশের ভেতরের চেয়ে বাইরে লেনদেন কমার হার ছিল বেশি- ৯.৯৪ শতাংশ। বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট কার্ডে খরচ করেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। এরপরই আছে যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ড। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে।
ওই প্রতিবেদন বলেছে- চলতি বছর মে মাসে দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডে ব্যয় হয় ২ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। এপ্রিলে এর পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে ব্যয় কমেছে ১.৪৭ শতাংশ। এ সময়ে বিদেশে বাংলাদেশিদের সার্বিকভাবেও ক্রেডিট কার্ডে ব্যয় কমেছে। গত এপ্রিলে বাংলাদেশিরা বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডে ৫০৬ কোটি টাকা ব্যয় করেছিলেন। মে মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক মাসের ব্যবধানে কমেছে ৯.৯৪ শতাংশ।
এতে দেখা যায়, গত এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে সৌদি আরব ও ভারতে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে যথাক্রমে ৬৪.৮৬ ও ২১.৮৫ শতাংশ। অন্যদিকে মে মাসে ভারতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ৭৬ কোটি টাকা খরচ করেছেন। এপ্রিলে এর পরিমাণ ছিল ৯৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে ২১.৮৫ শতাংশ অর্থব্যয় কমেছে। লেনদেনের পরিমাণ কমেছে ৩৩ হাজার ৬৩৬টি। মে মাসে ভারতে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৮৬ হাজার ১৫০ বার। গত এপ্রিলে এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৮৬। অর্থাৎ এক মাসে লেনদেনের সংখ্যা কমেছে ২৮ শতাংশের বেশি। এছাড়া গত মে মাসে থাইল্যান্ডে ১৮.০২ শতাংশ, আরব আমিরাতে ১৮.০২ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ১৩.১৭ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ৬.৭২ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ১.৫৬ শতাংশ এবং অন্যান্য দেশে ৬.২৯ শতাংশ অর্থব্যয় কমেছে। তবে এ সময়ে অর্থব্যয় বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪.১৩, যুক্তরাজ্যে ৬.৫৬, কানাডায় ৯.২৩, আয়ারল্যান্ডে ১৫.২৫ এবং নেদারল্যান্ডসে ১.৫৫ শতাংশ।
এদিকে মে মাসে বাইরে থেকে ইস্যু করা অর্থাৎ বিদেশি নাগরিকরা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশে লেনদেন কমিয়েছে ১৪.৬৭ শতাংশ। এপ্রিলে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৯০ কোটি টাকা, যা মে মাসে কমে হয়েছে ১৬৯ কোটি টাকা।
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশের অভ্যন্তরে, বাইরে এবং দেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোয়। দেশের অভ্যন্তরে এ খাতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪০১ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫১.০৯ শতাংশ। এছাড়া খুচরা কেনাকাটায় ১৩.৭৩ শতাংশ, নগদ উত্তোলনে ৭.০৫, পোশাক কেনাকাটায় ৪.০৮, ওষুধ ও ফার্মেসিতে ৫.৫১, পরিবহন খাতে ৩.২০, অর্থ স্থানান্তরে ৩.৩০, ব্যবসায় ১.৯৭, পেশাগত সেবায় দশমিক ৭১ ও সরকারি সেবায় দশমিক ৪১ শতাংশ লেনদেন হয়।
বিদেশে ২৬.৫৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। অন্যান্য ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে খুচরা ক্রয়সেবায় ১৭.৩৭, ওষুধ ও ফার্মেসিতে ১৩.০৭, নগদ উত্তোলন ৫.৮৭, পোশাক কেনাকাটায় ৮.১২ ও পরিবহন খাতে ৮.৮১ শতাংশ।