সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
কিউবার প্রধান বিদ্যুৎ প্ল্যান্টে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় দেশব্যাপী ব্ল্যাকআউটের সম্মুখীন হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশটির ১০ মিলিয়ন মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জাতীয় পাওয়ার গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে দেশটির মন্ত্রণালয় সোশ্যাল মিডিয়ায় গতকাল শুক্রবার জানায়।
গ্রিড কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ পুনঃস্থাপন করতে কত সময় লাগতে পারে তা এখনও স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
দ্বীপটি কয়েক মাস ধরে দীর্ঘ ব্ল্যাকআউটের শিকার হয়েছে। দ্বীপের বৃহত্তম মাতানজাসে আন্তোনিও গুইটারাস পাওয়ার প্ল্যান্ট শুক্রবার বন্ধ হয়ে গেলে দেশটি ব্ল্যাকআউটের মধ্যে পড়ে।
প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল বারমুডেজ বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিদ্যুত পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত কেউ বিশ্রামে থাকবে না।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রধান লাজারা গুয়েরার পরে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
এর আগে কর্মকর্তারা ঘোষণা করেছিলেন, নাইটক্লাবসহ সকল স্কুল এবং অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রম সোমবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। কিছু কর্মীদের বিদ্যুৎ সরবরাহ রক্ষার জন্য বাড়িতে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল এবং সরকারি পরিষেবা, যেগুলোর গুরুত্ব কম সেগুলো স্থগিত করা হয়।
স্থানীয় মিডিয়া অনুসারে, পিক আওয়ারে বা প্রয়োজনীয় সময়ে ফ্রিজ এবং ওভেনের মতো সরঞ্জামগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মধ্য হাভানায় বসবাসকারী ৮০ বছর বয়সী পেনশনভোগী এলোয় ফন এএফপিকে বলেছেন, ‘এটা খুব বাজে পরিস্থিতি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা দেখায়… আমাদের কাছে কোনো মজুদ নেই, দেশকে টিকিয়ে রাখার মতো কিছুই নেই।’
প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ম্যারেরো বৃহস্পতিবার একটি টেলিভিশন বার্তায় জনসাধারণের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় অবনতিশীল অবকাঠামো, জ্বালানি ঘাটতি এবং বিদ্যুতের ব্যর্থতার জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে দায়ি করেছেন।
তিনি বলেন, ‘জ্বালানির ঘাটতির সবচেয়ে বড় কারণ ক্রমবর্ধমান চাহিদা।’
ন্যাশনাল ইলেকট্রিক ইউনিয়নের (ইউএনই) প্রধান আলফ্রেডো লোপেজ ভালদেসও স্বীকার করেছেন, বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে দ্বীপটি একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালের জুলাই মাসেও দিনব্যাপী ব্ল্যাকআউটের কারণে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে এসেছিল।
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় মূল্যবান খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। অনেক ভবনে পেট্রোল চালিত পাম্পের সাহায্যে পানি সরবরাহ করা হয়। পাম্পে পেট্রোল না থাকলে মৌলিক বা জরুরি কাজগুলো নাগরিকরা আর করতে পারছে না।
কিউবান সরকার বর্তমানে বুঝতে পেরেছে দ্বীপের অনেকেই দৈনন্দিন সমস্যার কথা বলার জন্য রাস্তায় নেমে পড়ছে। কেউ কেউ রাজপথে নেমে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতেও প্রস্তুত। গত মার্চ মাসেও কিউবার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সান্তিয়াগোতে শত শত মানুষ দীর্ঘস্থায়ী ব্ল্যাকআউট এবং খাদ্য ঘাটতির সমস্যার মধ্যে পড়েছিল।
সূত্র: কালের কণ্ঠ