দুর্গাপুর প্রতিনিধি:
দুর্গাপুরে আবারো শুরু হয়েছে পাল্লা দিয়ে প্রকুর খনন। বর্তমানে পুকুর খননের ফলে ফসলি জমি এখন শুন্যের কোটায় নেমে পড়েছে। যে দিকে চোখ পড়ছে সেদিকেই সুধু পুকুর কননের চিত্র। গত এক মাস থেকে দুর্গাপুর উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় শতশত বিঘা আবাদি জমিতে চলছে পুকুর খননের হিড়িক। অভিযোগ ওঠেছে উপজেলা প্রশাসন ও প্রভাবশালী নেতাদের ছত্র ছায়ায় চলছে পুকুর খনন।
গত বছরে শ্রেণী বদল করে হাই কোট থেকে নামে মাত্র রিটকপি নিয়েই যাচাই বাছাই ছাড়াই পুকুর খনন করলেও এবছরে কোন প্রকার ডিড না করেই প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে পুকুর খনন। উপজেলার বাসির মাঝে এখন একটাই প্রশ্ন কেন পুকুর খনন বন্ধ হচ্ছে না। পুকুর খনন বন্ধের দাবীতে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ দিয়েও সুফল পাচ্ছে না উপজেলা বাসী।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১০ থেকে ১৫টি স্থানে পাল্লা দিয়ে এক শ্রেনীর ব্যবসায়ীরা বেশি টাকার প্রলোভন দেখিয়ে চাষিদের ৩-৪ ফসলি জমি নষ্ট করে বড় বড় আয়তনের পুকুর খনন করে চলেছেন। সরেজমিনে উপজেলার সব কটি ইউনিয়নের আঁনাচে কাঁনাচে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
উপজেলা বম্রপুর গ্রামে প্রভাবশালী রুহুল আমিন নামের এক ব্যাক্তি অনোমদন ছাড়াই প্রভাব খটিয়ে আনুলিয়া ও সুখানদিঘী বিলে প্রায় এক মাস যাবতৎ বিশাল আয়তনের পুকুর খনন করছে, অভিযোগ ওঠেছে রুহুল আমিন ওই এলাকার একটি ক্যানেল বন্ধ করে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে জোর পুর্বক পুকুর খনন করেই চলেছেন। একই এলাকার চুলকানির বিলে সাহাদ আলী নামের এক ব্যাক্তি পুকুর খনন করছেন।
এছাড়াও উপজেলার শাবাহাস পুর গ্রামের বাশা নামের এক ব্যাক্তি তার এলাকায় একটি পুকুর খনন করছেন, বর্দ্ধনপুর গ্রামে আনারুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি বর্ন্ধনপুর বিলে পুকুর খনন করছেন। এছাড়াও দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আনাচে কানাচে প্রশাসনের ছত্র ছায়ায় পুকুর খনন চলছে দেদারছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত ৪ বছরে এই উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ২শ’ ৫৫ হেক্টর ফসলি জমি পুকুর খননের ফলে কমে গেছে।
তবে এবছরে আরো কয়েশ হেক্টর ফসলি জমি পুকুর খননের গর্ভে যাবে। পুকুর খনন যদি বন্ধ না করা হয় আগামি বছরে এই উপজেলার আবাদী জমি হারিকেন দিয়েও খুজে পাওয়া যাবে না।
উপজেলার কয়েজন সচেতন ব্যাক্তিরা জানান, এমনিতেই পুরো বাংলাদেশরে মধ্যে দুর্গাপুরে সবচেয় বেশি পুকুর রয়েছে। বর্তমানে যে হারে পুকুর খননের কাজ চলছে তাতে করে আগামি দুই এক বছরের মধ্যে এই উপজেলায় খাদ্য নিরাপত্তায় হুমকিতে পড়বে। তারা আরো জানান, এক শ্রেণীর অসাধু ব্যাসায়ীরা চাষিদের ভুলভাল বুঝিয়ে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ৮ থেকে ১০ বছরের জন্য পুকুর খননের জন্য লিজ গ্রহন করছেন। ফলে চাষীরা আগামি দিনে কথা না ভেবেই তারা তাদের জমি দিয়ে দিচ্ছেন তাদের।
চাষিদের সচেতন ও পুকুর খনান বন্ধ না করলে এই উপজেলার মানুষ এক সময় বড় ধরনরে বিপদগ্রামী হবেন। ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তার কথা ভেবে ফসলি জমি সুরক্ষায় সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে নীতিমালা প্রণয়নের দরকার বলে মনে করেন তারা। উপজেলার জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান সমসের আলী জানান, তার এলাকায় প্রায় ৩টি স্থানে ক্যানেল বন্ধ করে পুকুর খনন চলছে। ওই পুকুর খনন সম্পুন্ন হলে শতশত মানুষে অবাদি জমি জলবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। তিনি জনসার্তে পুকুন খননের জন্য এসিল্যানকে অবগত করলেও তিনি কোন প্রকান আইনআনক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সমর কুমর পালের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, আপনারা তথ্য সংগ্রহ করে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন আমরা খতিয়ে দেখবো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. বিমল কুমার প্রামানিক জানান, কৃষি জমি সুরক্ষা ৬৮ ধারা আইনে বলা আছে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে পুকুর খনন করা যাবে না। শ্রেণী বদল করতে হলে অনুমতি লাকবে। কোন অনুমতি ছাড়াই দুর্গাপুরে শ্রেণী বদল করে পুকুর খনন করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যার ফলে প্রতি বছরে প্রায় ৬ হাজার হেক্ট খাদ্যশষ্য উৎপাদন কমে গেছে। এভাবে আবাদি জমি কমতে থাকলে অচিরেই এই উপজেলায় খাদ্য নিরাপত্তা একদিন হুমকিতে পড়বে বলে মনে করেন তিনি।
স/আ