নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী স্টেশনে টেন্ডার বা কোটেশনের আগেই প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল কেনার প্রমাণ পেয়েছে দুদুক। গত বৃহস্পতিবার দুদকের একটি দল রাজশাহী স্টেশনে পরিদর্শনে গিয়ে এ অনিয়মের তদন্ত করে আসেন। এর আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ নিয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠে ও সিল্কসিটিনিউজে একটি অনুসন্ধানী খবর প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি তদন্তে নামে দুদক।
দুদকের রাজশাহী কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাজশাহী স্টেশনে টেন্ডারের আগেই বিপুল অংকের টাকার মালামাল কেনার সংবাদটি প্রকাশ হওয়ায় সেটি তদন্তের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুমতি পাওয়ার পরে গত বৃহস্পতিবার দুদকের একটি দল রাজশাহী স্টেশনে গিয়ে এর প্রমাণও পেয়েছে। এখন আইন অনুযায়ী পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাজশাহী রেলওয়ে সূত্র মতে, গত বছরের শেষের দিকে প্রায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের জন্য বেশকিছু ফার্নিচার, ট্রেনের বগি চিহ্নিত এলইডি লাইট ও অভ্যার্থনার জন্য এলইডি লাইট সরবরাহ করেন আলমগীর হোসেন নামের একজন ঠিকাদার। গত বছরের অক্টোরে সরবরাহকৃত এসব মালামাল কিছুদিন পরে স্টেশনে ব্যবহারও শুরু হয়। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই কিছু নষ্টও হয়ে যায়।
অভিযোগ ওঠে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের তৎকালীন প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজের আস্থাভাজন ঠিকাদারকে দিয়ে আগেই মালামালগুলো সরবরাহ করে নেওয়া হয়। যাতে করে পরে ইচ্ছামতো বিল উত্তোলন করা যায়। এটি করতে গিয়ে স্টেশনে কিছু ভিআইপি চেয়ার (গদিওয়ালা) চেয়ারও অপ্রয়োজনে সরবরাহ করা হয়। চেয়ারগুলোর জায়গা না হওয়াই স্টেশনের যাত্রীদের অপেক্ষারত কক্ষের বাইরেও রাখা হয়। অথচ বছর খানেক আগেও এই স্টেশনেই চেয়ার সরবরাহের নামে প্রায় কোটি টাকা লোপাট করা হয়।
১৭-১৮ হাজার টাকার স্টিলের চেয়ার সরবরাহের নামে অপচয় করা ৪০-৪৫ হাজার টাকা করে। আবার ২০-২৫ হাজার টাকার সোফা সেট সরবরাহ করে বিল উত্তোলন করা হয় ৮০-৮৫ হাজার টাকা করে। এরপর আবারো গত বছরের অক্টোবরে এলটিএম বা টেন্ডার না করেই রাজশাহী স্টেশনের কয়েক লাখ টাকার মালামাল সরবরাহ করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি করেন তৎকালীন প্রথান বাণিজ্যিকি কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজ ও তাঁর আস্থাভাজন ঠিকাদার। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার কয়েকদিন পরেই শাহ নেওয়াজকে পূর্বাঞ্চলে বদলি করা হয়।
এদিকে টেন্ডার ছাড়ায় মালামালগুলো সরবরাহ কারা করেছে সেটি জানেন না বলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান সরাঞ্জম কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন শেখ দাবি করে বলেন, এই ধরনের কোনো নির্দেশনা আমার দপ্তর থেকে যায়নি। যারা এই নির্দেশনা দিয়েছেন তারা বিল দিবেন। আমার দপ্তর এই কাজের কোনো বিল পরিশোধ করবে না।’
স/আর