বৃহস্পতিবার , ১৪ জুলাই ২০১৬ | ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ঝিনাইদহে সাঈদ পরিচয়ে থাকতেন নিবরাস

Paris
জুলাই ১৪, ২০১৬ ১০:৪৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ:
ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা নিহত জঙ্গী নিবরাস ইসলাম পরিচয় গোপন করে সাঈদ নামে ঝিনাইদহ শহরের সোনালীপাড়ায় বাসা ভাড়া কররে থাকতেন। নিবরাস নিহত হবার যে বাড়িতে সে সাঈদ পরিচয়ে থাকতো সেই বাড়ির মালিকসহ ৫ জনকে আইন শৃংখলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও বাড়ি মালিকের স্ত্রী জানান। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।

নিবরাস সাঈদ পরিচয়ে ঝিনাইদহ শহরের যে বাসায় থাকতেন সেখান থেকে ঘুরে এসে জানা গেছে, ঝিনাইদহের সোনালী পাড়ায় সাবেক সেনা সার্জেন্ট কওসার আলীর বাড়ি ভাড় নিয়ে নিবরাস ইসলামের সাথে আরো ৭/৮ জন যুবক থাকতেন। সোনালীপাড়া মসজিদের ইমাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়া বিভাগের ছাত্র রোকনুজ্জামন তাদেরকে এই বাসা ভাড়া করে দেন। নিবরাস ইসলাম ওরফে সাঈদ গত ২৮ জুন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার মাস ওই ভাড়া বাড়িতে ছিলেন। বৃহষ্পতিবার বাড়ির মালিক সেনাবাহীনির সাবেক সার্জেন্ট কওছার আলী মোল্লার স্ত্রী বিলকিস নাহার এ সব তথ্য সাংবাদিকদের জানান।

তবে তিনি নিবরাস ইসলামকে সাঈদ বলে জানতেন বলেও জানান।

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলাকালে বাড়ির মালিকের স্ত্রী বিলকিস নাহার বলেন, গুলশান হামলায় সন্দেহ ভাজন জঙ্গী নিবরাস ইসলামই সাঈদ। সে আমাদের বাড়িতে সাইদ পরিচয়ে ছিল। আমি ছবি দেখে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।
ছবির সাথে চেহারার মিল রয়েছে।

এই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন নিবরাস

এই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন নিবরাস

এদিকে জঙ্গী নিবরাস ইসলামকে সহায়তার দায়ে ঝিনাইদহ থেকে ৫জনকে আটক করেছে ঢাকা থেকে আসা আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ টিম।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় আটকৃতরা হলেন, ঝিনাইদহ শহরের সোনালী পাড়ার ঠান্ডু মোল্লার ছেলে কাওছার আলী মোল্লা, তার দুই ছেলে ঝিনাইদহ কলেজের ছাত্র বিনছার আলী, নারিকেলবাড়িয়া কলেজের ছাত্র বেনজির আলী, হামদহ সোনীপাড়া মসজিদের ইমাম যশোরের ঝিকরগাছার নায়রা গ্রামের রোকনুজ্জামান ও শারশিনা মাদ্রাসার ছাত্র আদর্শপাড়া কচাতলার মাদ্রাসা শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের কিশোর ছেলে হাফেজ আব্দুর রব।

গত ৬ জুলাই সন্ধ্যার সময় এদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবী করেন কাওসার আলী মোল্লার স্ত্রী বিসকিস নাহার। তিনি আরো দাবী করেন ঈদের দিন (৭ জুলাই) বিকাল ৩ টার দিকে তাকেও ঝিনাইদহ র‌্যাব ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এর আগের দিন সন্ধ্যায় (৬ জুলাই) র‌্যাবসহ একটি বিশেষ বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে তার স্বামী, দুই ছেলে, মসজিদের ইমাম ও তারাবির নামাজের হাফেজকে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তাদের কোন খোজ নেই।

আটক মসজিদের ঈমাম

আটক মসজিদের ঈমাম

প্রশ্নে পাশাপাশি সচেতন মানুষের মাঝে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে সোনালী পাড়ার সাবেক সেনা সদস্যের ভাড়া বাড়ির ওই সাঈদই যদি নিবরাস ইসলাম হয় তবে তিনি ঝিনাইদহ থাকা অবস্থায় জেলায় কিছু আলোচিত হত্যা সংঘটিত হয়।

এই হত্যার তালিকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই পুরোহিতসহ রয়েছে খ্রীষ্টান হোমিও চিকিৎসক ও শিয়া মতবাদের এক ব্যক্তি। এই চার হত্যাকান্ডের বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস দায় স্বীকার করে বিবৃতি প্রচার করে। যা গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার সাথে মিল রয়েছে।

গত ৭ জুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার করোতিপাড়া গ্রামের আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলী খুন হন। নিহত আনন্দ গোপালের বাড়ি ও নিবরাস ইসলাম ওরফে সাঈদ যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেই বাসার মালিক কওছার আলী মোল্লার বাড়ি একই গ্রাম বাগডাঙ্গা করোতিপাড়ায়।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালুহাটী গ্রামের বেলেখাল বাজারে খ্রীষ্টান হোমিও চিকিৎসক সমির বিশ্বাস ওরফে সমির খাজা ও ১৪ মার্চ কালীগঞ্জ শহরের নিমতলা এলাকার শিয়া মতবাদের হোমিও চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাককে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

সর্বশেষ গত ১ জুলাই ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামে এবার স্থানীয় রাধামদন মঠের সেবায়েত শ্যামানন্দ দাসকে (৬২) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে জানান, নিবরাস এর বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। তিনি ৫ জনের আটক সম্পর্কে বলেন, এদের কে আটক করেছে, কেন করেছে বলতে পারছি না। তার কাছে এমন কোন তথ্য নেই।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আর এক ব্যক্তি জানান, এই সোনালী পাড়ায় বিভিন্ন সময় নসিমনে করে বোরখা পরিহিত মহিলারা বিভিন্ন জায়গা গোপন বৈঠক করেন। তবে তারা ঠিক কোন বাড়িতে যান তা বোঝা যায় না।

স/শ

সর্বশেষ - জাতীয়