নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাটঃ
জয়পুরহাটে দুদু ও স্বপন আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে নৌকার মাঝি হওয়ায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। আজ রোববার আওয়ামীলীগ সভাপতির দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন চিঠি দেওয়া হয় মনোনয়ন প্রার্থীদের।
জয়পুরহাট-১ (জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি উপজেলা) আসন থেকে আওয়ামীলীগের ১৫ জন মনোনয়ন তুললেও বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড.সামছুল আলম দুদু ও জয়পুরহাট-২ (কালাই-ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলা) আসন থেকে ৫ জন মনোনয়ন তুললেও বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জয়পুরহাট-১ আসনটি বিএনপি’র দখলে যায়। মাঝে ১৯৮৬ সালে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় আসনটি আওয়ামী লীগ পেলেও পরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোতে বিএনপি প্রার্থী অনেক ব্যবধানে জয়লাভ করে। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত জোট হওয়ায় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাট-১ আসনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী মোজাহার আলী প্রধান বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। দশম সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামছুল আলম দুদু মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে বিনাভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
অপরদিকে জয়পুরহাট-২ আসনটি ১৯৯১ সাল থেকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অর্থাৎ পঞ্চম থেকে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির দখলে ছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চার দলীয় জোটের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা মহাজোটের প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে পরাজিত করেন। উল্লেখ্য, বিএনপি জোট বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করায় এ আসনটিতেও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন মহাজোটের একক প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
সে কারণে জয়পুরহাট ১ ও ২ আসনটির যে কোন একটি মহোজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ার গুঞ্জন উঠলেও শেষ পর্যন্ত দুটি আসনেই আওয়ামীলীগের বর্তমান সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন দেওয়া হয়।
অন্যদিকে আওয়ামীলীগের জেলা সভাপতি দুদু ও সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান গ্রুপ এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এর অনুসারী গ্রুপের মধ্যে কোন্দল বিগত দিনে বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচী ও দলীয় কর্মকান্ড পাল্টা-পাল্টিভাবে পালন করতে দেখা গেছে এভাবে যদি দলীয় গ্রুপিং এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকে তবে বিএনপি-জামায়াতের দুর্গ হিসেবে পরিচিত দুটি আসনই ধরে রাখা আওয়ামীলীগের জন্য কঠিন হবে।
জয়পুরহাট জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখর মজুমদার বলেন, দলীয় গ্রুপিং থাকলে দুই প্রার্থীর জন্যই বিজয় মালা ছিনিয়ে আনা কষ্টকর হবে, এক আসনের কর্মী দুই এ গেলে এবং দুই আসনের কর্মী এক এ আসলে উভয় আসনেই কর্মী সংকট দেখা দিবে।
জয়পুরহাট জেলা যুবলীগের সভাপতি প্রভাষক সুমন কুমার সাহা জানান, যখন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তখন থেকেই আমাদের মধ্যে আর কোন ভেদাভেদ নেই , আমরা এক সঙ্গে কাজ করে নৌকাকে জয়ী করব।
জয়পুরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলী বলেন, আমরা অল্প দিনের মধ্যেই দলীয় সভা ডেকে সকল সমস্যার সমাধান করা হবে এবং দেশনেত্রী শেখ হাসিনা যে দুইজনকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন তার পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব, কোন নেতা বা কর্মী এর ব্যতয় করলে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স/অ