নিজস্ব প্রতিবেদক,জয়পুরহাট:
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করছেন দাবি করে একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে ভাইরাল হয়েছে। তবে ওসি ওই অডিও ভুয়া বলে দাবি করেছেন।
অডিও রেকর্ডে শোনা গেছে, আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ও জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর পুনঘর গ্রামের জান ঈ আলম অপুকে ফোন করে সরকার এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় গালিগালাজ করে হুমকি দিয়ে দশ মিনিটের মধ্যে থানায় আসতে বলেন। ফোনালাপটি কে বা কারা অনলাইনে মেসেঞ্জারে ভাইরাল করেছে। এরপর থেকেই ওই অডিও নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়।
এ বিষয়ে জান ঈ আলমের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ঘটনাটি সত্য নয় এবং আমার কথা সাধারণ ডায়েরীতে আছে বলে তিনি জানান, তবে এর আগে ওই দিন সন্ধ্যায় তার ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাসে সে বলেছে, ছড়িয়ে পড়া ভুয়া অডিও ক্লিপের সাথে আমার সম্পৃক্ততা না থাকায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করলাম। নিচে তার কপি দেয়া হলো। কেউ বিভ্রান্ত হবেন না, প্লিজ।
আক্কেলপুর থানার ১৪ এপ্রিলের ৫২৮ নং জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমার ব্যক্তিগত, ‘জান ঈ আলম অপু’ আইডি থেকে লক্ষ্য করি কে এম ওয়াহদুজ্জামান নামক এক আইডি থেকে একটি ভুয়া কল রেকর্ড আপলোড করা হয় এবং উক্ত কল রেকর্ডের মূল বক্তব্য এটা ছিল- যে কোন একটি ইস্যু নিয়ে ওসি সাহেব আমাকে হুমকি দিচ্ছে। যেহেতেু কল রেকর্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং ভিত্তিহীন এবং এর সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই, কে বা কাহারা আমাকে ফাঁসানোর জন্য অথবা ওসি সাহেবের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য উক্ত ভুয়া রেকর্ডটি বানিয়ে প্রচার করতেছে তাই বিষয়টি সাধারণ ডায়েরি করা প্রয়োজন।
পূর্বে ‘জান ঈ আলম অপু’ র ফেসবুকে দেওয়া তার কিছু পোষ্টের কিছু স্কিন শটের কপি থেকে জানা যায়, ছাত্র অবস্থা থেকেই অপু ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত, বর্তমানে সে জিয়া ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব, শেখ মুজিবর রহমানের খুনি মাজেদের গ্রেফতারের বিষয় ও খুনি মাজেদের নাতি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এই নিয়ে জাগো নিউজে প্রকাশিত একটি সংবাদের অংশ টেনে মাজেদকে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিলেই ষোলকলা পূর্ণ,সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে পারদর্শী হলেই ছাত্রলীগের নেতা হওয়া যায়, ত্রাণের চাল চুরির ঘটনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়, পরে ছাত্রলীগের নেতাদের দ্বারা হুমকি ও হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন অপু।
এ নিয়ে আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ অপুর ফেসবুকে বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য করা নিয়ে একটি মৌখিক অভিযোগ থানায় দেওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন রাজা জানান,অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরে থানায় আক্কেলপুর উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাদের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালাম আকন্দের মধ্যন্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হয় এবং পরবর্তীতে এই ধরনের আর কাজ করবে না বলেও জানান ‘জান ঈ আলম অপু’। পরে অডিওটি ভাইরাল হলে ওই দিন বিকেলেই থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন অপু।
আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালাম আকন্দের আজ বুধবার সকালে মোবাইলে যোগযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ জিডির কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, অডিওটি সম্পূর্ণ বানানো। কে বা কারা শত্রুতামূলকভাবে এটি তৈরি করে ফেসবুকে ছেড়েছে। তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র এটি ভুয়া বলে থানায় জিডি করে তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে। থানায় লিখিত কোন অভিযোগ দেওয়া হয়নি এবং আমার কাছে কেউ আসেনি, পরে শুনলাম বিষয়টি ওরা ওরাই মীমাংসা করেছে।
উল্লেখ্য, জান ঈ আলম অপুর ফেসবুক পেইজে অডিওটি সত্য নয় বলে থানায় জিডিসহ একটি স্ট্যাটাস পাওয়া গেছে, কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো স্ট্যাটাস খুঁজে পাওয়া যায়নি।
