বুধবার , ৩১ জুলাই ২০২৪ | ৭ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ হচ্ছে আজ

Paris
জুলাই ৩১, ২০২৪ ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ

 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে কেন্দ্র করে একযুগ আগে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠলেও এতদিন তা পূরণ হয়নি। অবশেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত একাত্তরের সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াত ইসলামীকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে সরকার। বুধবার সরকারের পক্ষ থেকে এ আদেশ জারি হতে পারে। এদিকে জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক ঠেকাতে রাজধানীসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সরকার হয়তো নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন আগামীকালের (বুধবার) মধ্যে একটা ব্যবস্থা নেওয়ার। কোন আইনি প্রক্রিয়ায় হবে সেটা আমরা যখন সিদ্ধান্ত নেব তখন বলব। যদি এই দলটাকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে। যখন (কোনো দল) নিষিদ্ধ হয়, তখন নির্বাহী আদেশে হয়, বিচার বিভাগীয় আদেশে হয় না।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন রায়ে একাত্তরে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের ঘটনায় দল হিসেবে জামায়াতের সরাসরি সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে আসে। জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিচারের রায়ে জামায়াতকে ক্রিমিনাল দল হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়। সে সময় মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জামায়াতের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে দলটি নিষিদ্ধের দাবি ওঠে। তখন (২০১৪ সালের মার্চ মাসে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। কিন্তু সে বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হয়ে ওঠে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের সংশোধন। এরপর ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশজুড়ে নাশকতা ও শতাধিক নিহতের ঘটনায় ফের জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের বিষয়টি আলোচনায় আসে। বিষয়টি গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সভায় আলোচনা হয়। জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে এ বৈঠকে আওয়ামী লীগ ও তাদের রাজনৈতিক জোটসঙ্গীরা একমত হন। তারা বলেন, জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে রাজনৈতিকভাবে তাদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। এখন এ বিষয়ে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সরকারের স্বরাষ্ট্র, আইন, শিল্প, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে জামায়াত নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, জামায়াত নিষিদ্ধে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেটা যেকোনো সময় হতে পারে।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলছেন, কোনো সংগঠন নিষিদ্ধ হওয়ার পর সেই সংগঠনের ব্যানারে কোনো সভা-সমাবেশ কিংবা অন্য কোনো ধরনের তৎপরতা চালানো যায় না। এ ধরনের কোনো রাজনৈতিক কর্মকা- চালাতে গেলে সরকার তাদের আইনের আওতায় আনতে পারবে।

বিশ্লেষকরা জানান, নিষিদ্ধ করার পর কোনো ব্যক্তি যদি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ফেসবুক কিংবা অন্য কোনোভাবে প্রচারণা চালায়, তখন তাকে আইনের আওতায় আনতে পারবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তি যদি জামায়াতে ইসলামীকে আর্থিক সাহায্য করে, তাহলে তাকেও আইনের আওতায় আনা যাবে। কারণ নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে প্রচারণা চালানো এবং তাদের আর্থিক সহায়তা করা দ-নীয় হিসেবে বিবেচিত হয়।

২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ বলে ঘোষণা করেছিল হাইকোর্ট। বাংলাদেশের গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলও খারিজ হয়ে যায় ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন না থাকলেও রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা নিষিদ্ধ ছিল না।

নিষিদ্ধ করার আইনি ভিত্তি: এদিকে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি হচ্ছে- জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে হতে পারে। আরেকটি বিকল্প হচ্ছে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে। এ ছাড়া সংসদেও সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। সবকটি বিকল্প বিবেচনা করেছিল ক্ষমতাসীনরা। কিন্তু এই ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। আদালতের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হতে হলে যুদ্ধাপরাধের দায়ে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার হতে হবে। সে ক্ষেত্রে আইন সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে।

তবে নির্বাহী আদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯-এর আলোকে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে পারবে সরকার। এ ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপন জারি করলেই যথেষ্ট হবে। ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ‘নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তালিকাভুক্তকরণ’ শীর্ষক ১৮ নম্বর ধারায় বলা আছে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সন্ত্রাসী কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে মর্মে যুক্তিসঙ্গত কারণের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনকে সরকারি প্রজ্ঞাপন দ্বারা নিষিদ্ধ করতে পারবে।

এর আগে নিষিদ্ধ সংগঠন: দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থি হওয়ায় গত বছরের ৯ আগস্ট জঙ্গি সংগঠন ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারের কাছে এ মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামক জঙ্গি দল/সংগঠনটির ঘোষিত কার্যক্রম দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এরই মধ্যে দল/সংগঠনটির কার্যক্রম জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হওয়ায় বাংলাদেশে এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

২০১৫ সালে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ করা হয়। এ বিষয়ে সে সময়র স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছিলেন, তাদের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় এবং পুলিশের পক্ষ থেকে সংগঠনটি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব আসায় আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

জানা যায়, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ ধারা অনুযায়ী আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ করার অনুরোধ জানানো হয়। এরপর মন্ত্রণালয় সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এর আগে জঙ্গি তৎপরতা ও উগ্র ইসলামি সংগঠন হিসেবে ২০১৯ সালে জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’, ২০১৭ সালে ‘আনসার আল ইসলাম’, ২০০৩ সালে শাহাদত-ই-আল হিকমা, ২০০৫ সালে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি), ২০০৫ সালে জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) ও জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), ২০০৯ সালে হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করা হয়।

জামায়াতের বিচার ও নিষিদ্ধ করতে সরকারের প্রচেষ্টা : সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে তদন্ত সংস্থা ২০১৪ সালের মার্চ মাসে ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। কিন্তু সে বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হয়ে ওঠে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের সংশোধন।

২০১৪ সাল থেকে দীর্ঘসময় ধরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার ঝুলিয়ে রাখার বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ২০২৩ সালের ৬ মে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আপনাদের (সাংবাদিকদের) এটা মনে হওয়াটাও তো আমাদের (আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার) জন্য দুঃখের। কারণ এই সরকারই কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করেছে এবং তারা কিন্তু জামায়াতের হোতা ছিল, প্রতিষ্ঠাতা ছিল। সেই ক্ষেত্রে আপনারা যদি মনে করেন আমরা উদ্যোগী (বিচারে) নই, তা হলে সেটি আমাদের জন্য দুঃখজনক।

তা হলে বিচার ঝুলে থাকার পেছনে কারণ কী হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, আপনারা জানেন রাজনৈতিক দল হিসেবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে জামায়াতের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট যথেষ্ট নয়। এই আইনটি সংশোধন করা দরকার এবং সেই সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে। আমি এতটুকুই বলব। আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন। পরে আইনের খসড়াটির অবস্থান জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, আইন সংশোধনীর খসড়াটি মন্ত্রিপরিষদে চলে গেছে।

জানা গেছে, ‘জামায়াতের বিচার করতে সংশোধিত ট্রাইব্যুনালস আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় সংগঠন হিসেবে দোষী প্রমাণিত হলে সে সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার বিধান যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইনটির বেশ কিছু ধারায় ‘ব্যক্তি’ শব্দের পর ‘অথবা সংগঠন’, ‘দায়’ শব্দের পর ‘অথবা সাংগঠনিক দায়’, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তি’ শব্দের পর ‘অথবা সংগঠন’ যুক্ত করারও উদ্যোগ নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিচার করার জন্য উপযুক্ত আইন থাকতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট ১৯৭৩ সংশোধন করা হচ্ছে। এটা মন্ত্রিপরিষদের অ্যাপ্রুভালের জন্য অপেক্ষমাণ।

এর আগে ২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এক অনুষ্ঠানে তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বাংলাদেশ স্বাধীন হ্ওয়ার পরে ১৯৭২ সালের সংবিধনের ৩৮ ধারা অনুযায়ী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। সেই হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর কর্মকা-ও নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে ১৯৭৬ সালে সংবিধানের ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। এরপর প্রথমে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ হিসেবে আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী আবার কর্মকা- শুরু করে। তবে ১৯৭৯ সাল থেকে নিজেদের নামেই কর্মতৎপরতা শুরু করে দলটি।

জামায়াত নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব মার্কিন কংগ্রেসে : ধর্মীয় স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় জামায়াতের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে একটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছিল। পাশাপাশি বিএনপি ও অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও জামায়াতসহ অন্যান্য উগ্র রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। ২০১৯ সালের গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য জিম ব্যাংকস এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রস্তাবটিতে পাকিস্তানকেও দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় জামায়াতকে নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ভূমিকা রাখার কথা বলা হয়।

বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র উল্লেখ প্রস্তাবটিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে দেশটির স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ লোক প্রাণ হারান। বর্তমানে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে আট লাখেরও অধিক শরণার্থী দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা, বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টাান ও আহমদিয়া সম্প্রদায় জামায়াত ও এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছেন। আল কায়েদা ও তালেবানের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের যোগাযোগ রয়েছে উল্লেখ করে প্রস্তাবটিতে বলা হয়, বাংলাদেশের আইনজীবী ও বিরোধী রাজনীতিক কামাল হোসেন প্রকাশ্যেই বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক পরিম-লে জামায়াতের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ব্যাংকস বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক প্রস্তাবেও জামায়াতে ইসলামীর কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে বিএনপিকে আহ্বান জানানো হয়েছে। রিপাবলিকান দলের এই কংগ্রেসম্যানের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রেও জামায়াতে ইসলামীর ভাবধারা পোষণ করে এমন অনেক সংগঠন রয়েছে, যারা তহবিল সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত। জামায়াতে ইসলামী ও এর সহযোগী ভাবধারার সংগঠনগুলো দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক নিরাপত্তাসহ এই অঞ্চলের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহের এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেন কংগ্রেস সদস্য জিম ব্যাংকস।

 

 

সর্বশেষ - জাতীয়