সোমবার , ২০ নভেম্বর ২০২৩ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর
NBIU Spiring 2025 New Ad

জাপা নির্বাচনে যাচ্ছে, জাপা নির্বাচনে যাচ্ছে না ?

Paris
নভেম্বর ২০, ২০২৩ ৬:২২ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, বিরোধীদলগুলোর নির্বাচনে অংশ নেওয়া-না নেওয়া নিয়ে জনমনে কৌতূহল তত বাড়ছে। শেষ পর্যন্ত কোন দল নির্বাচনে যাবে, কারা যাবে না- এনিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা যেমন আছে, অন্যদিকে ভেতরে অনেক দল নির্বাচনের প্রস্তুতি সেরে রাখছে বলেও আভাস মিলছে। এই যেমন ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)।

জাপার শীর্ষ নেতারা বলছেন, ঘোষিত তফসিলে সময়ের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে দল নির্বাচনে যাবে কি না, শিগগির সে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। ফলে মনোনয়ন বিক্রি শুরু হলেও জাতীয় পার্টির ভোটে যাওয়ার নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই যাচ্ছে।

সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়৷ তবে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরুর ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত দলটি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, সে বিষয়ে এখনো স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি। নির্বাচনে যাওয়া-না যাওয়ার ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতারা।

নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারে। ফলে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টির নির্বাচনে আসা উচিত। তারা মনে করেন, জাতীয় পার্টি ভোটে না এলে ফাঁকা মাঠে গোল দেবে আওয়ামী লীগ।

জাপার একশ্রেণির নেতারা মনে করছেন, দেশে এখনো নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। বিরোধীদলগুলোকে স্পেস দেওয়া হচ্ছে না। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না। আবার জাপার কোনো কোনো নেতা বলছেন, নির্বাচনই গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারে। ফলে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টির নির্বাচনে আসা উচিত। তারা মনে করেন, জাতীয় পার্টি ভোটে না এলে ফাঁকা মাঠে গোল দেবে আওয়ামী লীগ।

এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে বনানী কার্যালয়ে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি৷ পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখছি। সময়ের বাধ্যবাধকতা আছে, তাই নির্বাচনী কার্যক্রম এগিয়ে রাখছি৷ দলের চেয়ারম্যান ৩০ নভেম্বরের আগে নির্বাচনে যাওয়া-না যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন৷

এদিন মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রমে উপস্থিত থাকলেও মুজিবুল হক চুন্নু নিজে ফরম সংগ্রহ করেননি৷ এছাড়া দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের ফরম নেওয়ার মাধ্যমে দলের মনোনয়ন ফরম বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন, এমন কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। জিএম কাদেরের অনুপস্থিতিতে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জাপা মহাসচিব। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার প্রমুখ।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ এখনো হয়নি। তবে আশা করছি ,পরিবেশ হবে৷ নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কার্যক্রম মিলিয়ে একটা আস্থার জায়গা তৈরি হবে।

জানা গেছে, উদ্বোধনী দিনে দলের প্রথম মনোনয়ন ফরমটি সংগ্রহ করেছেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এরপর দলের কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ ও সৈয়দ আবু হোসেন ফরম সংগ্রহ করেন। প্রথম দিনে ৫৫৭টি ফরম বিক্রি হয়েছে।

চুন্নু বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ এখনো হয়নি। তবে আশা করছি ,পরিবেশ হবে৷ নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কার্যক্রম মিলিয়ে একটা আস্থার জায়গা তৈরি হবে৷

এ বিষয়ে জাপার কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি৷ দেশ ও মানুষের স্বার্থে নির্বাচনে যাচ্ছি৷ দেশে যেভাবে উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে৷

তিনি বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে দেশের অগ্রগতি, দেশের স্বার্থ। বিদেশিরা এসে প্রেসক্রিপশন দেয়, এটা কেন হবে। আমাদের জাতীয় সমস্যা, আমরা সব দল একত্রে বসে সিদ্ধান্ত নেব। আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। প্রেসিডিয়াম সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে চেয়ারম্যান চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আপনারা অপেক্ষা করুন, তিনি (চেয়ারম্যান) কথা বলবেন। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আনন্দমুখর পরিবেশে সবাই ফরম নিচ্ছে।

গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে মহাজোটে অন্তর্ভুক্ত হলেও এবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বাঁধতে এবং ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচনে যেতে নারাজ জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

গতকাল রোববার জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও গ্রহণ করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) পর্যন্ত এই মনোনয়ন ফরম বিক্রি চলবে।

বদলেছে তৃণমূলের মনোভাব
গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে মহাজোটে অন্তর্ভুক্ত হলেও এবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বাঁধতে এবং ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচনে যেতে নারাজ জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

গত ১৪ নভেম্বর রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দিনব্যাপী জাপার বর্ধিত সভায় সারাদেশ থেকে আসা বেশিরভাগ নেতা আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যেতে অসম্মতি জানান।

ওই সভায় রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আওয়ামী লীগ বিশ্বাসঘাতক। তাদের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। আমাদের এমপিরা যদি ডুয়েল রোল প্লে না করেন- তাহলে আওয়ামী লীগ এককভাবে এদেশে কোনো নির্বাচন করতে পারবে না।

সেদিন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি নুরুচ্ছফা সরকার বলেন, এই সরকারের সঙ্গে থাকা ঠিক হবে না। তাদের সঙ্গে গেলে মানুষ আমাদের বেঈমান বলবে। ওই সভায় রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায়। তাদের অন্যায়ের দায়ভার আমরা কেন নেবো।

ওইদিন জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের নির্বাচনে যাওয়া-না যাওয়ার বিষয়ে সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে দলীয় নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতারা অনীহা জানালেও মনোনয়ন ফরম বিতরণের প্রথম দিন তৃণমূল নেতাদেরই ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। দলের নেতারা বলছেন, এখনো নির্বাচনে যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি না হলেও চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত মেনে তারা মনোনয়ন ফরম কিনছেন।

এদিন বরিশাল-১ (আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা) সংসদীয় আসন থেকে জাপার মনোনয়ন ফরম কিনেছেন দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সেরনিয়াবাত সেকেন্দার আলী। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, একা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ তা টেকাতে পারবে না। সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই সহযোগী লাগবে। জাতীয় পার্টিকে মারপিট করে মাঠ থেকে তুলে দেবে বলে আমার মনে হয় না।

একই দিন বরিশাল-৪ (মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলা) আসন থেকে মনোনয়ন ফরম কেনেন মিজানুর রহমান। তিনি জাতীয় পার্টির বরিশাল বিভাগীয় নেতা।

মিজানুর রহমান  বলেন, আমাদের ফাইট হবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে। আমরা একেবারে ভাইসা আসি নাই। আমাদের ভিত্তি আছে। আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবো।

আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেওয়া যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। যারা এখনো নির্বাচনের বাইরে আছে, আশা করি তারাও ভোটে আসবে।

Spiring 2025 New Design

সর্বশেষ - রাজনীতি