ছুটির মধ্যে রাজশাহী পলিটেকনিকে চলছে গাছ কাটার মহোৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক:



ছুটির মধ্যে রাজশাহী পলিটেকনিকে চলছে গাছ কেটে বিক্রি করার মহোৎসব। গত কয়েকদিনে রাতের আঁধারে অন্তত ৫০টি বিশালাকার গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশ গাছই রয়েছে মেহেগুনি প্রজাতির। এই গাছগুলো বিক্রি করে পলিটেকনিকের মসজিদ কমিটিকে টাকা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটার জন্য রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগের অনুমতির প্রয়োজন হলেও সেটি নেওয়া হয়নি। ফলে গাছ কাটা অর্থ তোছরুপেরও অভিযোগ উঠেছে।

গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘২০-২৫টি মরা গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কাটার জন্য একটি কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটির তিন সদস্যই এটি দেখভাল করছেন। তারা গাছ বিক্রির প্রায় ৮০ হাজার টাকা পলিটেকনিকের মসজিদের কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন।’

রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাতের আধারে এই প্রতিষ্ঠানের তাজা ও মরা গাছগুলো ইচ্ছামত কাটা হচ্ছে গত প্রায় ৭-৮ দিন ধরে। এরপর কাটা গাছগুলো সূর্য ওঠার আগেই সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব গাছ কাটা হচ্ছে, সেখানে মরা পাতা ও মাটি দিয়ে ঢেঁকে দেওয়া হচ্ছে। যেন কেউ সহজে বুঝতে না পারে সেখান থেকে গাছ কাটা হয়েছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটির মরা-তাজা মিলে দামি প্রায় ৫০টি গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে গত কয়েকদিনে।

গতকাল রবিবার দুপুরে রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে গিয়ে গাছ কাটার প্রমাণও মিলেছে। গাছ কাটার পরে কোনো কোনো স্থানে লতা-পাতা দিয়ে ঢেঁকে দেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে দায়িত্বরত কোনো কশমচারী মুখ খুলতে চাননি।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস আতঙ্কে দেশজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণার পর থেকে রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটটিও বন্ধ রয়েছ। আর সেই ফাঁকে চলছে গাছ কাটার মহোৎসব। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে।

নাম প্রকাশে কয়েকজ শিক্ষক-কর্মচারী বলেন, ‘গোপনে চুরি করে গাছ কেটে বিক্রি করে টাকা কি করা হচ্ছে সেটা নিয়েও রয়েছে রহস্য। আবার সব গাছই বিক্রি হচ্ছে না। কেউ কেউ গাছ কেটে বাড়ির ফার্নিচার তৈরীর জন্যেও নিয়ে যাচ্ছে শ-মিলে। তবে নামে মাত্র বিক্রি করার কথা বলা হচ্ছে। এর জন্য কোনো টেন্ডার বা কোটেশনও করা হয়নি। যা সম্পূর্ণ আইনবিরোধী কাজও বলে দাবি করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

স/আর