চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শান্তিমোড়ে টিভিএস কোম্পানীর মোটরসাইকেল শো-রুমে হামলা ও ভাংচুর করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় শো-রুমে লুটপাটের চেষ্টা করে তারা।
দেশীয় অস্ত্র ও হাত বোমা নিয়ে মঙ্গলবার (১৩ আগষ্ট) দুপুরে জেলা শহরের শান্তি মোড়ের এই শো-রুমে হামলা করে ১০-১২ জনের একটি সন্ত্রাসী দল। এরমধ্যে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সম্পর্কে আশেপাশে খোঁজ খবর নেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, সিসিটিভি ফুটেজ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে পৌর এলাকার শান্তি মোড়ে অবস্থিত টিভিএস শো-রুমে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়। জেলা শহরের ভেলুর মোড় এলাকার মৃত সৈয়দ আলতাফ হোসেন ভেলুর ছেলে সৈয়দ আতাউর হোসেন মিলনের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় তাদের হাতে রড, চাকু ও হাতবোমা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা।
সন্ত্রাসী বাহিনী শো-রুমের তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। এ সময় শো-রুমের বিভিন্ন অংশে ভাংচুর চালায় তারা। এমনকি শো-রুমের কয়েকজন কর্মচারী ও স্থানীয়দের মারধর করে তারা। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় মিলন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
মেসার্স নবেল ইলেকট্রনিক্সের স্বত্ত¡াধিকারী সৈয়দ শাহনেওয়াজ হোসেন নবেল বলেন, পূর্ব শত্রæতার জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার আগে ম্যানেজারকে ফোনে হুমকি দেয় মিলন। পরে আমরা যানমাল বাঁচাতে শো-রুম বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়ার পর এই সন্ত্রাসী হামলা ও ভাংচুর হয়েছে। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যেকোন সময় আবারো হামলা করতে পারে। যেভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছিল, তাতে আমাদেরকে পেলে যেকোন ক্ষয়ক্ষতি করতো। আমরা এই সন্ত্রাসী হামলার বিচার চাই।
নবেল ইলেকট্রনিক্সের ম্যানেজার দীপেন সরকার জানান, সকালে আমার মুঠোফোনে কল দেন সৈয়দ আতাউর হোসেন মিলন। মালিকের ছোট ভাই হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন সময়ে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করলেও মঙ্গলবার সকালে ফোনে শো-রুম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। তার হুমকির পর পুনরায় শো-রুম বন্ধ করে আমরা নিরাপদ স্থানে চলে যায়। এরপরই এই হামলা ও ভাংচুর হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি সাখাওয়াত জামিল দোলন বলেন, মিলন ও নবেল সম্পর্কে আপন ভাই। একই এরাকায় আমাদেও বাড়ি। তাদের পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই এই হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। হামলার সময় আমার অফিসের সামনে এক কর্মচারীকে পেয়ে রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে মিলন। এতে গুরুতর আহত হয় কর্মচারী শুভ। এ সময় আমি নিজে নিষেধ করতে গেলে আমাকেও হাতে থাকা একটি রড দিয়ে মারতে আসে মিলন। সাধারণ মানুষদেরকেও হুমকি ও ভয়ভীতি এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছে মিলন।
এ বিষয়ে সৈয়দ আতাউর হোসেন মিলনের মুঠোফোনে (০১৭৮৩৮১৫৫৩৩) কথা বলতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, এ বিষয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সাথে পুলিশ পাঠানো হয়। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।