শনিবার , ১১ মে ২০২৪ | ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ঘুঘুডাঙ্গা বাংলাদেশের দীর্ঘতম তাল গাছের সড়ক

Paris
মে ১১, ২০২৪ ৭:৩২ অপরাহ্ণ

নিয়ামতপুর প্রতিনিধি :

কালের বির্বতনে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী ও মানুষের পরম বন্ধু তাল গাছ। মানুষের কল্যাণে, বসবাসের চাহিদা পূরণ ছাড়াও বিভিন্ন কারণে আমরা প্রতিনিয়ত পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী তাল গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু ৩৪ বছর আগে রোপণকৃত তালবীজ এখন রাস্তার দু’পাশে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম ঘুঘুডাঙ্গা।

হাজিনগর গ্রামের মজুমদার মোড় থেকে ঘুঘুডাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারে শত শত তাল গাছ দাঁড়িয়ে আছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নওগাঁ-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার তাল গাছগুলো রোপণ করেছিলেন। তিনি ১৯৮৬ সালে যখন হাজিনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন সে সময় নিজ হাতে তাল গাছগুলো রোপণ করেছিলেন। আজ সেই তাল গাছগুলো ৫০ থেকে ৬০ ফিট লম্বা হয়ে রাস্তার দু’ধারে শোভা বর্ধন করে আসছে।

বরেন্দ্র বহুমুর্খী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এর তথ্যমতে, ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন রাস্তা ও খাড়ির (খাল) পাশে প্রায় ৭২০ কিলোমিটারের বেশি জায়গাজুড়ে লাগানো হয়েছে ৩০ লাখের বেশি তাল গাছ। বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত নওগাঁর নিয়ামতপুর, পোরশা, পত্নীতলা ও ধামুইরহাট, রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, রহনপুর উপজেলার রাস্তার দু’পাশে লাগানো হয়েছে এসব তালগাছ। তারপরও তাল গাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই তাল গাছ হারিয়ে গেলেও নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ঘুঘুডাঙ্গায় এখনও কালের স্বাক্ষী হয়ে তাল গাছের সারি। রাস্তার দু’ধারে সৌন্দর্য বর্ধন করে যাচ্ছে।। এ বিষয়ে ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের হুমায়ন হোসেন বলেন, তাল গাছগুলো আমাদের ঐতিহ্য আমাদের অহংকার। এখন প্রতিনিয়ত শত শত মানুষ দেখতে আসছে তাল গাছগুলো। আজ যখন তাল গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে তখন আমার গ্রামের রাস্তার দু’ধারে শত শত তালগাছ দাঁড়িয়ে আছে। এতে আমরা নিজেদের ধন্য মনে করছি।

স্থানীয় হাজিনগর গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল বলেন, আমাদের এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার যখন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান ছিলেন তখন প্রায় ২কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে তালগাছ গুলো রোপণ করেন। সে সব তাল গাছ আজ রাস্তার দুপাশে মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে। হাজিনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামে। আমি যখন ইউনিয়ন পরিষদে যাই তখন ওই তালগাছ সমৃদ্ধ রাস্তায় এলে নিজেকে অন্যরকম মনে হয়। মাননীয় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এর লাগানো তালগাছ গুলো আজ রাস্তার পাশে বর্তমানে শোভাবর্ধন দাঁড়িয়ে যা মানুষকে ছাঁয়া দান করে যাচ্ছেন। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি”র ছোট মেয়ে তৃণা মজুমদার জানান, কিছু কিছু ভালো কাজের ফল প্রকৃতি পূর্ণতা দিয়ে দান করে।

আর তা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। বাবা যখন ১৯৮৬ সালে তাল গাছের বীজ গুলো রোপণ করেছিলেন তখন তিনি পরিবেশ ও প্রকৃতির কথা বিবেচনা করেই রোপণ করেছিলেন। ৩৪ বছর আগে রোপণ করা তালবীজ বর্তমানে রাস্তার দু’পাশে মাথা উঁচু করে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সকলের উচিত তাল গাছসহ সব ধরনের গাছ লাগানো। গাছ আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য এবং গাছ আমাদের পরম বন্ধু। নিয়ামতপুর উপজেলা বিএমডিএ’র জোন এর সহকারী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, পরিবেশের পরম বন্ধু তালগাছ একটি ঔষধি গুণ সম্পন্ন ফল। গাছও খুবই শক্ত, ঝড়ে ভাঙে না। ফসলের শেল্টার বেল্ট হিসেবে কাজ করে।

তাল গাছ ভূমি রক্ষায় কাজ করে। পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র রক্ষায় ভূমিকা রাখে। বজ্রপাতের হাত থেকেও তাল গাছ আমাদের রক্ষা করে। তিনি আরও বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে এক সময় গাছপালা খুব কম ছিল। সে সময় গ্রামগঞ্জে শুধু তালগাছ চোখে পড়তো। কিন্তু কালের পরিবর্তনে তাল গাছ বাদ দিয়ে মানুষ অন্যান্য গাছ লাগানো শুরু করে। যেগুলো ছিল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এ জন্য ২০০৮ সালে বিএমডিএ বরেন্দ্র অঞ্চলে তাল গাছের চারা লাগানো প্রকল্প গ্রহণ করে।

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর