শুক্রবার , ৮ অক্টোবর ২০২১ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘গণআন্দোলন সফল করতে সবার ঐক্য গড়ে তুলতে হবে’

Paris
অক্টোবর ৮, ২০২১ ১০:৪৮ অপরাহ্ণ

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে বিএনপিকে রাজপথে নামার পরামর্শ দিয়েছেন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা। পাশাপাশি এই ইস্যুতে আন্দোলন কর্মসূচি দিলে তাতে সক্রিয় অংশ নেওয়ারও অঙ্গীকার করেন তারা।

তারা বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে পরিকল্পনা মাফিক সবাইকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গণআন্দোলন সৃষ্টি করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এর বিকল্প নেই। বিএনপিকে এই পরামর্শ দিয়েছেন পেশাজীবীরা।

ভার্চুয়ালি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ শুক্রবার প্রথম দিন রুদ্ধদ্বার বৈঠকে পেশাজীবীরা এই পরামর্শ দেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। বিকাল ৪টা থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা এই বৈঠক হয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে দুই দফা সভার পর পেশাজীবী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করছে বিএনপি। আজও (শনিবার) পেশাজীবীদের সঙ্গে সভা রয়েছে। এ দু’দিনে ৩২টি পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা অংশ নেবেন।

সভায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, আইনজীবী ফোরাম, ডাক্তার এসোসিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন, এগ্রিকালচার এসোসিয়েশন, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোট, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, এমবিএ এসোসিয়েশন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন, ডিপ্লোমা এগ্রিকালচার এসোসিয়েশন, নার্সেস এসোসিয়েশন, টেক্সটাইল এসোসিয়েশন, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটসহ ২০টি পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বৈঠকে অংশ নেন। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন।

সভার শুরুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দী। আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ থেকে উত্তরণে সবার মতামত আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সূত্র জানায়, পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা তাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব লিখিত আকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে দেন। কয়েকটি সংগঠনের নেতা সভায় বলেন, অবৈধ সরকারের পতন ঘটাতে মৌলিক একমাত্র লক্ষ্য হবে- নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। এই লক্ষ্যে কঠিন সংকল্প নিয়ে একদফা আন্দোলনে নামতে হবে। অর্থাৎ আন্দোলন হবে এক দফার ভিত্তিতে। বাড়তি অন্য কোনো অপশন দেয়া যাবে না। আন্দোলনে একাধিক দাবি থাকলে মূল দাবি দুর্বল হয়ে যায়।

নেতাকর্মীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তখন বিক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলনের মহাস্রোতটি ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে হয়ে একসময় হারিয়ে যায়। মূল দাবি মানতে বাধ্য করাতে পারলে অন্যান্য দাবিসমূহ যথাসময়ে পূরণ হতে থাকবে।

আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সকল সদস্যকেই রাজপথে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ থাকতে হবে। ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মাঠে অত্যন্ত সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। কোনো কিছুই বিক্ষিপ্তভাবে করা যাবে না। বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে আলাদা আলাদা সেল তৈরি করার পরামর্শ দিয়ে নেতারা বলেন, একেকটি সেলের দায়িত্বে থাকবেন একজন করে কেন্দ্রীয় নেতা।

সভায় বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সেলিমা রহমান। বৈঠক পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। সহযোগিতায় ছিলেন তথ্য গবেষণা সম্পাদক রিয়াজুদ্দিন নসু সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির হোসেন ও বেলাল আহমেদ। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সাহলে প্রিন্স।

সভায় পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বলেন, অতীতের মতো বর্তমানেও গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপিকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। বিএনপির নেতৃত্ব মেনে নিয়ে এই আন্দোলনের অংশীদার হতে চাইলে ছোট-বড় যে কোনো দলকে জোটে নেয়া যাবে।

পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, ফজলুর রহমান, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ ডালিম ডোনার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট  রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. আব্দুস সালাম, ডা. আব্দুস সেলিম, ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. শফিকুল হায়দার পারভেজ, প্রকৌশলী মাহবুল আলম, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, সেলিম ভুঁইয়া, শামীমুর রহমান শামীম, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, জিকে এম মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অ্যাডভোকেট তাসলিমা আক্তার, প্রকৌশলী ইবনে ফজল সাইফুজ্জামান সেন্টু, প্রকৌশলী মুসলিম উদ্দিন,  অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, অধ্যাপিকা কামরুন নাহার লিজি, জাহানারা সিদ্দিকী, শেখ মনিরউদ্দিন, কামরুল হাসান সদ্দার, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, প্রকৌশলী ফখরুল আলম, প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, রোকেয়া চৌধুরী বেবি, পারভিন কাওসার মুন্নী, সুমনা আক্তার স্মৃতি, শাহনাজ আক্তার, রফিকুল ইসলাম, এ কে এম মুসা লিটন, মামুনুর রশীদ, কামরুজ্জামান কল্লোল, ডা. মির্জা লিটন, ডা. আমিনুল বারী কাকনসহ মোট ১০২ জন।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

সর্বশেষ - জাতীয়