বুধবার , ১৩ জুলাই ২০১৬ | ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

কাশ্মীরে হিংসা থামাতে বাবামায়েদের সাহায্য চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী

Paris
জুলাই ১৩, ২০১৬ ৯:১৯ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে টানা পাঁচদিন ধরে চলা সহিংসতা ও অস্থিরতার পটভূমিতে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ক্ষুব্ধ যুবকদের সামলানোর জন্য তাদের বাবা-মাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সেই সঙ্গেই তিনি কথা দিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে যেখানেই অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে – তার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত হবে।

উপত্যকায় এখনও টানা কারফিউ চলছে, ওদিকে সংঘর্ষে আহত প্রায় দেড় হাজার লোক এখনও হাসপাতালে ভর্তি। তাদের অনেকেই চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, ওদিকে টান পড়ছে ওষুধ ও রক্তেও।

হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গী বুরহান ওয়ানি এনকাউন্টারে মারা যাওয়ার পর পুরো পাঁচদিন কেটে গেলেও কাশ্মীর উপত্যকা এখনও শান্ত হয়নি। কাশ্মীরে আজ ছিল শহীদ দিবস – ১৯৩১য়ে রাজ্যের ডোগরা শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ৮৫তম বার্ষিকী।

সেই উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি শ্রীনগরে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন।

তার আগে গত কয়েকদিনের নীরবতা ভেঙে তিনি রাজ্যের বাবা-মাদের প্রতি আবেদন জানান – তারা যেন তাদের উত্তেজিত ছেলেদের শান্ত করে ঘরে আটকে রাখেন, হিংসা থামাতে সাহায্য করেন।

টিভিতে প্রচারিত ওই ভাষণে মেহবুবা বলেন, ”জুম্মাবারে মাগরিবের নামাজের সময়ই আমি খবর পাই এনকাউন্টারে তিনজন জঙ্গী মারা গেছে, যার মধ্যে বুরহান ওয়ানিও আছে। আমি জানতাম এর পরেই মানুষ ক্ষোভ জানাতে রাস্তায় নামবে, বিশেষ করে যুবকরা। কিন্তু তাতে যেন কোনও প্রাণহানি না-হয় সে চেষ্টাতেই আমি সঙ্গে সঙ্গে কারফিউ জারি করি। কিন্তু সরকারের সব রকম চেষ্টা সত্ত্বেও প্রাণহানি এড়ানো যায়নি, এটাই আমাকে মর্মাহত করেছে।”

মুখ্যমন্ত্রী সেই সঙ্গে কথা দিয়েছেন, পুলিশ বা সেনাবাহিনী যেখানে অপ্রয়োজনে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেই সবগুলো ঘটনার তদন্ত হবে।

ওদিকে কাশ্মীরি যুবকদের অবশ্য এখনও শান্ত হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই – কুলগাম, ট্রাল-সহ বিভিন্ন এলাকায় থানা বা পুলিশ-ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে তারা অস্ত্র ছিনিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কুলগামের একটি থানা থেকে সত্তরটি অটোমেটিক বা সেমি-অটোমেটিক বন্দুক লুঠ করে তারা বিরাট অস্ত্রভান্ডারও গড়ে তুলেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

হাসপাতালেও ভর্তি শত শত জখম যুবক – যাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ জনতার ছোঁড়া পাথরে চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।

রাজ্যের অপথ্যালমোলজি বিভাগের প্রধান ড: সাজাদ খানডে জানান, অন্তত একশোজন চোখে গুরুতর আঘাত নিয়ে ভর্তি – যাদের আশিজনেরই এখনও অস্ত্রোপচার করা যায়নি। পরিস্থিতি খুবই যন্ত্রণাদায়ক – যে সামান্য কয়েকজনের আমরা অপারেশন করতে পেরেছি তাদের অবস্থাও খৃুবই আশঙ্কাজনক। এরা দৃষ্টিশক্তি আদৌ ফিরে পাবে কি না সেটাও আমরা এখনই কিছু বলতে পারছি না!

এদিকে রাজ্য সরকার পরিস্থিতি শান্ত করতে যে বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতাদের সাহায্য চেয়েছেন – তারা সরাসরি সেই প্রস্তাবে সাড়া না-দিলেও ‘রাজনৈতিক পথে’ কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানের ডাক দিয়েছেন।

হুরিয়তের অন্যতম প্রধান নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুক মুখ্যমন্ত্রীর একটি পাল্টা টেলিভিশন বিবৃতি জারি করে বলেছেন আমি ভারতবাসীকে বলব, কাশ্মীরে শান্তি ও প্রগতি আনতে হলে তাদের এখানকার বাস্তবতাটা বুঝতে হবে।

”সুশাসন বা আর্থিক প্যাকেজ দিয়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে না। আমাদের যুবকরা কিন্তু চাকরির দাবিতে রাস্তায় গুলি খেয়ে প্রাণ দিচ্ছে না, তারা চায় আধিপত্যবাদের অবসান। ফলে বাড়তি সেনা পাঠিয়ে তাদের দমানো যাবে না – এই দাবির নিষ্পত্তি করতে হবে রাজনৈতিক পন্থাতেই।”

পাঁচদিনের কারফিউতে রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে টান পড়েছ, এমন কী হাসপাতালে ওষুধের জোগানও ফুরিয়ে আসছে।

উপত্যকার বিস্তীর্ণ অংশে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ – তারই মাঝে বিক্ষিপ্তভাবে এখানে ওখানে চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে কাশ্মীরি যুবকদের সংঘর্ষ।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক