সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আয়ের অন্যতম উৎস গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং। বন্ডেড ওয়্যার হাউস ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরেই কার্গো হ্যান্ডেলিং করে এলেও কাস্টম হাউসের চাপে গত বছর লাইসেন্স নেয় বিমান। তবে লাইসেন্স নিলেও শর্ত মানতে নারাজ বিমান। সম্প্রতি বিমান আমদানি কার্গো ভিলেজের পণ্য সুরক্ষা বা হেফাজতের দায় নেওয়া সম্ভব নয় বলে চিঠি দিয়ে কাস্টম হাউসকে জানিয়েছে। বিমান ও কাস্টম সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমদানি-রফতানিকৃত পণ্য কার্গোতে হ্যান্ডলিং করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও আমদানি কার্গো থেকে প্রতিনিয়ত মালামাল চুরি হওয়ায় ক্ষুব্দ ব্যবসায়ীরা। চুরির ঘটনায় অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পায় না ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
এসব ঘটনার জন্য বিমানবন্দরে আমদানি-রফতানিতে কার্গো হ্যান্ডলিং ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং এজেন্ট হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে দুষছে ব্যবসায়ীরা। বন্ডেড ওয়্যার হাউসের লাইসেন্সবিহীনভাবে কার্গো হ্যান্ডলিং করায় বিমান বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া সম্ভব হয় না। যদিও ১৯৬৯ সালের দ্য কাস্টমস অ্যাক্টের ১২ ধারা অনুযায়ী এসব সেবা দিতে লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক। তাই ঢাকা কাস্টম হাউসের চাপের মুখে ২০১৬ সালে বন্ড লাইসেন্স নেয় বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
সূত্র জানায়, বন্ডেড ওয়্যার হাউসের লাইসেন্সের সব শর্ত মানা সম্ভব নয় বলে ৬ জুলাই চিঠি দিয়ে কাস্টম হাউসকে জানায় বিমান। এয়ারলাইন্সটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোসাদ্দিক আহমেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়, ‘ঢাকা কাস্টমস হাউস লাইসেন্সে যেসব শর্ত দিয়েছে তার সবগুলো বিমানের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। আমদানি কার্গো ভিলেজের ওয়্যার হাউসটির সংস্কার, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও নিশ্চিত হয়নি। জায়গার অভাবে অনেক মালামাল গুদামের বাইরে অরক্ষিত রয়েছে। ফলে অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে লাইসেন্সের সব শর্তগুলো মানা সম্ভব হবে না।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, ‘কার্গো হাউসের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিমানের। তবে ওয়্যার হাউসটির সংস্কার, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অবকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। বিমানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কিছু সমস্যার সমাধান করা হয়েছে এবং দ্রুত সমস্যার সমাধানের জন্য সিভিল এভিয়েশন অথরিটিকে জানানো হয়েছে।’
ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার প্রকাশ দেওয়ান বলেন, ‘যেকোনও প্রতিষ্ঠান বন্ডেড ওয়্যার হাউসের লাইসেন্স নিলে লাইসেন্সের শর্ত মানার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিমানের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
তবে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও সিভিল এভিয়েশন অথরিটির কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।