সৈয়দ আনোয়ার সাদাৎ
পরাধীনতার শিকল ছিড়ে সদ্যপ্রাপ্ত স্বাধীনতা
পেল যখন আলোর আভাস,
কোটি বাঙালী দেখলো স্বপ্ন,
বাঁধতে চাইলো বাসর,
বিধ্বস্ত রণভূমি সাজলো আবার নতুন যুদ্ধ সাজে,
ধেয়ে আসা অসম্ভব সাফল্য কাড়লো সবার নজর।
মায়ের শাড়ির আঁচল শূন্য থেকে হল পূর্ণ,
কেটে গেছে যুগ-যুগের ভাবনা,
সহায় আল্লাহ,
সবার চোখে নতুন স্বপ্ন,
নতুন আশা–আর তলা বিহীন ঝুড়ি নয়,
আমার সোনার বাংলা।
কিন্তু সোনার বাংলা গড়ার যুগ-যুগের সাধনা
বাস্তব রুপ পেতেই-পায়নি।
ধ্বংসোন্মত্ত পাষাণেরা
শান্তনীড়ে আগুন জ্বালিয়ে আবার করলো ছাঁই,
সদ্য সাজানো বাগানের ফুল কুঁড়ি ঝরালো অবাঁধে।
যে পায়রা আপন মনে গাইতে চেয়েছিল স্বাধীনতার গান,
গড়তে চেয়েছিল বাঙালীর সাথে শ্যামল বাসর,
কালশুকুনি কোত্থেকে উড়ে এসে মারলো থাবা,
বাংলার নিপূণ কারিগরের বুক নিমিষেই হল ঝাঁঝরা
নরপিশাচের বুলেটে,সে কী নির্মম ইতিহাস!
নব বধূর মিষ্টি হাসিতে মুখোরিত ধানমণ্ডির ৩২ নং বাড়ি,
তখনো বধূর হাতের মেহেদীর রঙ আর স্মৃতি
লম্বা কেশ হতে মিলন মালার সুবাস হারিয়ে যায়নি।
শিশু সুকান্ত,
রাসেল ছিল আনন্দে উদ্বেল,
ঘুম ঘোরে স্বপ্নের রেষ তখনও কাটেনি প্রভাতের আলোয়,
ঠিক তখনই এজিদের দল করে
কোলাহল ঘেরিয়া তাঁদের বাঁজাইলো কলিংবেল,
টিপিলো ট্রিগার
এক নিমিষে বাংলা হয়ে গেল কাশিম-সখিনা,
আসগর প্রয়াণের রক্তাক্ত কারবালা প্রান্তর।
হৃদয়ের সাত সুরে বিদ্ধ হল বিষাক্ত তীর,
দোয়েল-শ্যামার কণ্ঠ হল রোধ,
মহা হুংকার তুলে আবির্ভূত হল নর রুপী জানোয়ার!
গোলাপ,বেলি,জুঁই,চামেলী
নিষ্পেসিত করলো তারা উল্লাসে।
জনক – জনকী হারানো সেই তাণ্ডব ভুলি নাই,
ভুলি কী করে জাতির সেই কলংকিত অধ্যায়?
কলংকের দাগ মুছিতে ফিরে ফিরে আসে চেতনায়
ভুলি নাই,ভুলি নাই,
খুনিরা সাবধান!
তোদের ক্ষমা নাই।