সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
ইরানের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ। আগামী ২৮ জুন দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার পর দেশটি গত সপ্তাহে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। গত শনিবার (২৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ঘোষণা করেছেন- তিনি আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছেন। আহমাদিনেজাদ সমর্থকদের পরিচালিত দোলাত বাহার টেলিগ্রাম চ্যানেল গত শনিবার ভক্তদের উদ্দেশে আহমাদিনেজাদের একটি ভিডিও পোস্ট করেছে।
সেখানে আহমাদিনেজাদ বলেছেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে ‘পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পরিবর্তন হচ্ছে।’
আহমাদিনেজাদ আরও বলেন, ‘শুধু ইরানে নয়, সারা বিশ্বেই দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে এবং আমি আশাবাদী যে, আমরা শিগগিরই একটি দারুণ পরিবর্তন দেখতে পাব। ’
এর আগে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর আগামী ২৮ জুন দেশটিতে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ইরান গত সপ্তাহে ঘোষণা করে। আগামী ৩০ মে প্রার্থীদের নিবন্ধন শুরু হবে এবং আগামী ১২ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন।
এদিকে ইরানের পার্লামেন্টে আহমাদিনেজাদ সমর্থকরা ইতোমধ্যেই তার সম্ভাব্য প্রার্থীতাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, তিনি (মাহমুদ আহমাদিনেজাদ) ‘দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।’
ইরানিয়ান লেবার নিউজ এজেন্সি (আইএলএনএ)-এর সাথে কথা বলার সময় পার্লামেন্টে তাবরিজের প্রতিনিধি আহমাদ আলিরেজা বেইগি বলেন, ‘মাহমুদ আহমাদিনেজাদ যদি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তবে তিনি জিতবেন।’
তবে তিনি আরও বিশদে না গিয়ে আহমাদিনেজাদকে (প্রার্থী হিসেবে) অযোগ্য ঘোষণার পরিণতি সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন। মূলত আহমাদিনেজাদকে এর আগে ২০১৭ সালে এবং ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দিয়েছিল গার্ডিয়ান কাউন্সিল। এই কাউন্সিল মূলত ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
আহমাদ আলিরেজা বেইগি বলেন, ‘আহমাদিনেজাদকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, গার্ডিয়ান কাউন্সিল তাকে প্রার্থীতার জন্য অনুমোদন দেবে। কারণ তিনি যদি প্রার্থী হওয়ার পথে এগিয়ে যান এবং পরে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়, তাহলে এর পরিণতি হবে মারাত্মক।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পরে মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ইরানের শাসন ব্যবস্থার কট্টর সমালোচক হয়ে ওঠেন, এমনকি সর্বোচ্চ নেতা খামেনির প্রকাশ্যে সমালোচনাও করেন তিনি।
এছাড়া আহমাদিনেজাদ গত দুই বছর ধরে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন এবং সর্বোচ্চ নেতার ঘনিষ্ঠ অনুগতদের রোষানল এড়াতে বেশিরভাগ সময়ই নীরব থেকেছেন।
উল্লেখ্য, মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এর আগে তিনি তেহরানের মেয়র ছিলেন। ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কঠোর সমালোচনাও করেছিলেন।
এছাড়া ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও কঠোর অবস্থানে ছিলেন মাহমুদ আহমাদিনেজাদ।