সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় একটি আশ্রয়কেন্দ্রে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এক দম্পতি। যাদের বয়স শতবর্ষের কাছাকাছি। বসতবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নিরুপায় হয়ে এসেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
তারা হলেন সাঘাটা উপজেলার বাঁশহাটা গ্রামের ওমিছা বেগম ও তার স্বামী রওশন আলী।
সাঘাটা নতুন কুড়ি আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রশস্ত বিদ্যালয়টির দুই পাশের কক্ষে আশ্রয় নিয়েছে বানভাসি অসহায় মানুষগুলো। তাদের চোখেমুখে বিষণ্নতার ছাপ। কেউ মেঝেতে শুয়ে আছে, কেউ বসে আছে আর ছোট অবুঝ শিশুগুলো খেলা করছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতেই ডান পাশে পর পর দুটি স্বাস্থ্য ক্যাম্প। সেখানে পর্যায়ক্রমে সেবা নিচ্ছেন বানভাসি অসুস্থ মানুষেরা। এদের মধ্যে শিশু ও নারীদের সংখ্যাই বেশি।
আশ্রয়কেন্দ্রটিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এসকেএসের উদ্যোগে বসানো হয়েছে এই চিকিৎসা ক্যাম্প।
ক্যাম্পের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত ডা. সাখাওয়াত হোসেন জানান, প্রতিদিন শতাধিক রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। তারা ডায়রিয়া, আমাশয়, চর্মসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত।
স্বাস্থ্য ক্যাম্প ছাড়িয়ে আরেকটু সামনেই আশ্রয়কেন্দ্রের একটি রুমের দরজার সামনে পলিথিন বিছিয়ে শুয়ে আছেন রোগ-শোকে ভেঙে পড়া প্রায় শতবর্ষী বৃদ্ধ রওশন আলী। পাশে মাথার কাছে বাসে আছেন তার স্ত্রী ওমিছা বেগম।
ওমিছা বেগম জানান, বাড়িঘর সবকিছু বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। চারদিক পানি আর পানি। তাই অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে এসেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। সরকারিভাবে ১০ কেজি চাল ও ১ কেজি সয়াবিন তেল পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে অসুস্থ রওশন আলী জানান, দুই সন্তানের মধ্যে ওসমান আলী (৪৫) কাঁচামাল ব্যবসায়ী এবং লোকমান হোসেন (৪০) ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান। তারা খুব কমই খোঁজখবর রাখেন। পানি কমলেই বসতভিটায় ফিরে যাবেন বলে জানান তারা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কুমার সরকার জানান, দ্রুত নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষ নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন।
সূত্র: রাইজিংবিডি