সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) অতি সম্প্রতি নতুন আম্পায়ারদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বাড়ানোর কোর্স আয়োজন করেছিল। যেসব আম্পায়ার বিসিবির এই কোর্সে টিকে গেছেন, তাদের সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠান হয় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের মিডিয়া ব্লকে। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। তার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন উপস্থিত তরুণ আম্পায়াররা। তাদের মধ্যেই হুট করে খুঁজে পাওয়া গেলো জাতীয় দলের তিন ক্রিকেটারকে। জাতীয় দল থেকে অবসর না নিলেও যারা আম্পায়ারিং কোর্স সম্পন্ন করেছেন।
জাতীয় দলের ব্লেজার গায়ে বসে আছেন নারী দলের তিন ক্রিকেটার রুমানা আহমেদ, শারমিন আক্তার সুপ্তা ও শামীমা সুলতানা। আম্পায়ারিং এর কোর্সে অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তারাও। ছেলে-মেয়ে মিলিয়ে ৯৮ জন কোর্সে উত্তীর্ণ হন। সুপ্তা তাদের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছেন। আন্তর্জাতিক ম্যাচে তারা তিনজন একসঙ্গে বহু ম্যাচ খেলেছেন। আজকে তিন জন একসঙ্গে আম্পায়ারিং কোর্সও করলেন।
মূলত খেলোয়াড়ি জীবন শেষেও ক্রিকেটের সঙ্গে জুড়ে থাকা আর খেলার নিয়ম কানুনগুলো আরেকটু ভালো করে বোঝার জন্যই দুই ক্রিকেটার অংশ নিয়েছেন ৫ দিনের এই কোর্সে।
সুপ্তা জানালেন, ‘আমাকে ফাহিম স্যারসহ (নাজমুল আবেদীন ফাহিম) অনেকেই বলেছিলেন খেলার বাইরেও খেলাসংক্রান্ত এসব কোর্স করে রাখার জন্য। ওই সময়টায় ফাঁকা ছিলাম, তাই করে নিয়েছি। অনেক কিছু জানতে পেরেছি। বিশেষ করে ডেড বল, রানআউট এসব ব্যপারে অনেক কিছু আছে, যা আমরা অনেকদিন ধরে খেলেও জানতে পারিনি। খেলা ছাড়ার পরও ক্রিকেটের সঙ্গে থাকা যাবে, সেরকম একটা ভাবনা তো আছেই। এর বাইরেও নিয়মগুলো ভালোভাবে জানা থাকলে খেলোয়াড় হিসেবেও এই জ্ঞানটা আমাকে সাহায্য করবে।’
এখন আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয় কমবে বললেন অলরাউন্ডার রুমানা, ‘বোলার হিসেবে আমার এখন এলবিডব্লিউ আউটটা বুঝতে অনেক সুবিধা হবে, ব্যাটিংয়ের সময়েও বুঝতে পারবো তখন রিভিউ নেওয়াটা উচিত হবে কি না। আম্পায়ারদের আসলে খুব দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত দিতে হয়, অনেক সময় আমরা আম্পায়ারদের ভুল বুঝি। এখন তাদের দিকটাও আমরা বুঝতে পারছি।’
সুপ্তাও বললেন তার আম্পায়ারিং শেখার গল্প, ‘আমি একদিন বিসিবির মেডিক্যাল উইংয়ে পা দেখাচ্ছিলাম দেবাশীষ স্যারকে। তখন ফাহিম স্যার আমাকে বলেন এই কোর্সের ব্যাপারে, বলেন যে আমাদের মতো শিক্ষিত মেয়েরা না আসলে কারা আসবে? সেজন্যেই আসা। অনেক কিছু শিখেছি। এখন মনে হচ্ছে আম্পায়ারদের ধৈর্য্য অনেক বেশি। এই কোর্সটা করার পর আম্পায়ারের সিদ্ধান্তগুলো সহজে মেনে নিতে পারবো।’
প্রসঙ্গত, আম্পায়ারিং প্রশিক্ষণ কোর্সে ৯৪৪ জন আবেদন করেন, যাদের ভেতর থেকে ৩৮৭ জনকে অ্যাপ্টিটিউড টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। সেখান থেকে ১১৭ জনকে ৫ দিনের প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হয়, তাদের ভেতর ৯৮ জন সফলতার সঙ্গে এই কোর্সে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
কোর্স পরিচালনা করেন সাবেক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার এনামুল হক মনি, আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল ও চীফ ম্যাচ রেফারি রকিবুল হাসান।
বুধবার সনদপ্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম, ইফতেখার আহমেদ মিঠু, এলিট প্যানেল আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত, আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল ও এনামুল হক মনি। প্রধান অতিথি হিসেবে সনদপত্র প্রদান করেন বিসিবি সভাপতি ফারুক।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন