শনিবার , ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

আমদানিতেও নাগালের বাইরে ডিমের দাম

Paris
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ

 

সিল্কসিটি নিউজে ডেস্ক:

সরকারের আমদানির সিদ্ধান্তের পরও ডিমের পেছনে ভোক্তার খরচ আরও বেড়েছে। ডিমের আমদানি শুরুর পর পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম আরও বেড়েছে। খুচরা বাজারে ফার্মের বাদামি ডিমের প্রতি ডজন (১২ পিস) দাম বেড়ে ১৬০ টাকায় পৌঁছেছে। ডিমের এমন লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে বেজায় চটেছেন ভোক্তারা। অনেকে আবার ডিম কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন।

মূলত বন্যার অজুুহাতে ডিমের বাজারে দাম বাড়তে শুরু করে। এ সময় এক লাফে দাম বেড়ে ফার্মের ডিমের ডজন ১৫৫ টাকায় পৌঁছায়। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে স্বস্তি ফেরাতে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত রবিবার সন্ধ্যায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ২ লাখ ৩২ হাজার পিস ডিম বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিকৃত ডিম কয়েকটি এলাকায় বিক্রি হয়েছে মাত্র।  তাই এখানে এর কোনো প্রভাবও পড়েনি। আগের মতোই সরবরাহ কম থাকায় এবং উৎপাদন খরচ বাড়তি থাকায় বাজার এখনো চড়া রয়েছে।

খুচরা বিক্রেতারাও বলছেন একই কথা। তারা বলছেন, যে পরিমাণ ডিম আমদানি হয়েছে তা চাহিদার বিপরীতে খুবই সামান্য। তা ছাড়া রাজধানী পর্যন্ত তা পৌঁছেছে কিনা, সেটাও নিশ্চিত নন।

রাজধানীর মালিবাগ, সেগুনবাগিচা ও কদমতলী এলাকার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল ফার্মের বাদামি ডিমের ডজন বিক্রি হয়েছে ১৫৬ টাকা থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে যা ১৫৫ টাকার আশপাশে বিক্রি হয়েছে। এর আগে ছিল ১৫০ টাকা।

মালিবাগ বাজারের ডিম ব্যবসায়ী মো. শরীফ বলেন, শুক্রবার প্রতি পিস কেনায় দাম পড়েছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ মিলিয়ে দাম দাঁড়ায় ১২ টাকা ৬০-৬৫ পয়সা। দুই-তিন দিন আগে কেনা দাম ছিল ১২ টাকা থেকে ১২ টাকা ১০ পয়সা। মাসখানেক আগে এ ডিম ১১ টাকা ৭০-৭৫ পয়সাও কেনা গেছে।

ডিমের দর নিয়ে মালিবাগ বাজারের একজন ক্রেতা মো. নজরুল ইসলাম ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘পেঁয়াজের মতো ডিম নিয়েও এখন কিছু দিন পরপর খেলাধুলা চলে। অসাধু ব্যবসায়ীরা বারবার পার পেয়ে যাওয়ায় ভোক্তাদের পেয়ে বসেছে। অল্পদিনে অনৈতিকভাবে বিপুল টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এসব বন্ধ হবে কবে। আজকে দাম শোনার পর ডিম আর কিনব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যও বলছে, এক মাসের ব্যবধানে ডিমের পেছনে ভোক্তার খরচ ৫ শতাংশ বেড়েছে। সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ বলছে, গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে ফার্মের ডিমের হালি (৪ পিস) ৫২ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে যা ৫০ থেকে ৫৩ টাকা এবং গত মাসে ৪৮ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এদিকে খামারিরা বলছেন, আমদানি কখনই সমাধান হতে পারে না। দেশের ভেতরেই সমস্যাগুলো আগে সমাধান করতে হবে। নইলে দেশের খামারিরা বড় ক্ষতির মুখে পড়বে এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।

প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশে ডিমের চাহিদা ৪ কোটি পিস। ডিমের উৎপাদন রয়েছে সাড়ে ৪ কোটি পিস। চাহিদার থেকে যেখানে উৎপাদন বেশি হচ্ছে, সেখানে ডিম আমদানির প্রশ্নই আসে না। সরকারের ডিম আমদানির ভুল সিদ্ধান্তে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়বে, দেশীয় খামারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এতে পরে সংকট আরও বড় আকার ধারণ করবে। ডিম ও মুরগির উৎপাদনে ৭৫ ভাগ খরচ ফিডের পেছনে ব্যয় হয় উল্লেখ করে সুমন আরও বলেন, ফিড সিন্ডিকেট চক্রগুলোকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তা হলে ডিমের দাম এমনিতেই কমে আসবে।

একই পণ্যে একই কায়দায় বারবার অস্থিরতা দেখা দিলেও তার সমাধান মিলছে না। এতে ভোক্তাদের মাঝে হতাশা বাড়ছে বলে জানান ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, অতীতেও ডিম নিয়ে অনেক কাণ্ড হয়েছে। অনুসন্ধানে নানা অনিয়মের চিত্র বেরিয়ে এসেছে। কারসাজিকারীদের নাম উঠে এসেছে। তা ছাড়া ব্যবসায়ী সমিতিগুলোও অনৈতিকভাবে মূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। আসলে সমস্যাগুলো আমাদের জানা আছে। এখন শুধু সমাধানে নজর দিতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা, দেশের পরিবর্তিত এই প্রেক্ষাপটে এগুলোর সমাধান হবে।

 

 

সর্বশেষ - অর্থ ও বাণিজ্য