সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশে গত কয়েক মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এখনো তাদের কৃতকর্মের জন্য কোনো অনুশোচনা প্রকাশ করেনি। বিশেষত, ছাত্র আন্দোলন দমনকালে শক্তি প্রয়োগ ও প্রাণহানির জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করেনি। দলটি এখনো দাবি করছে, সবকিছু ছিল একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। এই পরিস্থিতিতে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা আপাতত নেই, তবে দলের নেতারা আশা করছেন যে জনগণের হতাশা বৃদ্ধি পেলে অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থন কমে যাবে। তৃণমূলের অনেক নেতা বিদেশে থাকা শীর্ষ নেতাদের কর্মসূচি ঘোষণা নিয়ে ক্ষুব্ধ, কারণ তারা মনে করেন এতে দেশে তাদের কর্মীরা বিপদে পড়তে পারেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ক্ষমা না চাইলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পুনরুত্থান কঠিন হবে।
‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ তত্ত্ব
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানকে শুরু থেকেই ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র” হিসেবে চিহ্নিত করে আসছে আওয়ামী লীগ। গত জুলাইয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে দেশে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাই প্রথম ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেন।
‘এটা যে একটা বিরাট চক্রান্ত, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল,’ গত ২৪ জুলাই সাংবাদিকদের বলেন শেখ হাসিনা।
ক্ষমতা হারানোর তিন মাস পরেও আওয়ামী লীগ একই কথা বলছে।
‘এটা (গণঅভ্যুত্থান) যে একটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল, ইউনূস সরকারের কথাবার্তা ও কাজ-কর্মেই সেটি ক্রমেই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিজেও সে কথা স্বীকার করেছেন।’
উল্লেখ্য যে, গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভে’র একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি বলেন, ‘এ (বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের) আন্দোলন খুব পরিকল্পিতভাবে চালিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিছুই হঠাৎ হয়নি।’
আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে যে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সরকাবিরোধিতায় রূপ নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতের পাশাপাশি বিদেশি শক্তিরও ভূমিকা রয়েছে।
‘স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যারা বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছে, তারাই এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্র প্রমাণ করতে চায়,’ বলছিলেন সাবেক নৌপ্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
গত ৫ আগস্টের পর ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও একই কথা জানিয়েছিলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি বলেন, ‘আমি এখন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, (আন্দোলনকারী) ছোট গোষ্ঠীটি বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে প্ররোচিত হয়েছিল। আমি (পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা) আইএসআইকে প্রবলভাবে সন্দেহ করি।’
যদিও এর আগেও বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এমন ষড়যন্ত্রের কথা বহু বার বলা হয়েছে। কিন্তু টানা দেড় দশক ক্ষমতায় থাকার পরও আওয়ামী লীগ কেন কথিত সেই ষড়যন্ত্র রুখতে ব্যর্থ হলো?
নাছিম বলেন, ‘ষড়যন্ত্র হচ্ছে সেটা আমরা জানতাম। কিন্তু কোটা ইস্যু ধরে সেটি যে এতদূর গড়াতে পারে, ওইটা আমরা কেউই ভাবতে পারিনি। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীগুলোও পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।’
দায় নিতে চায় না আওয়ামী লীগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে গত জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার সরকার যেভাবে বলপ্রয়োগ করেছে এবং তাতে যত মানুষ হতাহত হয়েছে, স্বাধীন বাংলাদেশে ইতিহাসে সেটি নজিরবিহীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী, আন্দোলন চলাকালে তিন সপ্তাহে সাড়ে আটশ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই মারা গেছেন গুলিতে।
এছাড়া আহত হয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি। তাদের মধ্যে অনেকেই হাত, পা এবং চোখ হারিয়েছেন; পঙ্গুত্বও বরণ করেছেন কেউ কেউ।
কিন্তু হতাহতের এসব ঘটনার পুরো দায় নিতে চায় না আওয়ামী লীগ।
নাছিম বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা বলে আসছিলাম যে, এই আন্দোলনে একটা তৃতীয়পক্ষ রয়েছে, যাদের গুলিতে সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে।’
পরিকল্পিত যেই ‘ষড়যন্ত্রে’র কথা আওয়ামী লীগ বলছে, সেটির অংশ হিসেবেই এটি কথা হয়েছে বলে মনে করেন দলটির নেতারা।
তিনি বলেন, সরকারের একজন উপদেষ্টাও তো এই কথা স্বীকার করেছেন যে, সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু রাইফেল বাংলাদেশের পুলিশ ব্যবহার করে না, অথচ সেই অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য যে, অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ১২ অগাস্ট তৎকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে আহত আনসার সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আহত আনসার সদস্যদের বক্তব্য শুনে আমার কাছে আশ্চর্য লাগছে। পুলিশের ফায়ার (গুলি) কম লাগছে তাদের। সিভিলিয়ান পোশাকে ৭.৬২ রাইফেলের গুলি লেগেছে। ম্যাসিভ ইনভেস্টিগেশন দরকার। এরা কারা? কাদের হাতে সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু রাইফেল গেল?’
যদিও পরে মি. হোসেন দাবি করেন যে, গণমাধ্যমে তাকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর হোসেন বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, পুলিশের কাছে সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু রাইফেল কারা দিয়েছে, এটা প্রথম আমি তদন্ত করবো…এমনকি আমি এ কথাও বলেছিলাম, সিভিলিয়ানদের হাতে আমি এই রাইফেল দেখেছি। দে আর নট পার্ট অব পুলিশ। আমি সেটাও তদন্তের কথা বলেছিলাম।’
তবে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকেই ‘তৃতীয়পক্ষের গুলি’ চালানোর বিষয়ে কথা বলে আসছিলো আওয়ামী লীগ। তাহলে তখন কেন তাদের দাবি অনুযায়ী ওই ‘পক্ষটি’কে শনাক্ত করা সম্ভব হলো না।
নাছিম বলেন, ‘সেটার কথা অবশ্যই মাথায় ছিল। কিন্তু তখন দেশে যে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল, সেটি সামাল দেওয়াকেই সরকার বেশি প্রাধান্য দিয়েছিল। ’
আওয়ামী লীগ এসব কথা বললেও পুলিশ, বিজিবি ও দলটির বন্দুকধারী নেতাকর্মীরা যে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে, সেটার অসংখ্য ছবি ও ভিডিও তখনই সামনে এসেছে। এমনকি ‘পুলিশের পোশাক পরে সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়েছে’ এমন বক্তব্যও তখন এসেছে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের মুখ থেকে।
‘এরকম ঘটনা যে একেবারেই ঘটেনি, সেটা তো আমরা অস্বীকার করছি না। ঘটনাগুলোর তদন্তও তো আমরা শুরু করেছিলাম। সেগুলোর তদন্ত শেষ করলেই কার কতটুকু দায়, সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে,’ বলেন নাছিম।
‘কিছু ভুল-ত্রুটি তো ছিলই’
গণঅভ্যুত্থানকে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ বললেও টানা দেড় দশক ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যে কিছু ভুল করেছে, সেটি অবশ্য স্বীকার করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
‘আওয়ামী লীগ তো আসমান থেকে আসা কোনো দল না। আমরা সবাই মানুষ। কাজেই দেশ পরিচালনার সময় কিছু ভুল হওয়া স্বাভাবিক। কিছু ভুল-ত্রুটি তো ছিলই,’ বলছিলেন বাহাউদ্দিন নাছিম।
আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে বড় একটি অভিযোগ ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে। বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসেবে, ওই সময় ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘ক্রসফায়ারের’ নামে অন্তত এক হাজার ৯২৬ জন মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন।
এর বাইরে, অসংখ্য মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন, যাদের কেউ কেউ শেখ হাসিনার পতনের পর এখন ফিরেও আসছেন। যদিও গুম হওয়া ব্যক্তিদের একটি বড় অংশের এখনও কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার।
এর বাইরে, অনিয়ম-দুর্নীতি, জমি দখল, বিদেশে বিপুল অর্থপাচারসহ আরও অনেক অভিযোগ সামনে এসেছে।
আওয়ামী লীগের গত তিন মেয়াদের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরে গড়ে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
অর্থপাচার করে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের অনেকে বিদেশে বিপুল সম্পত্তির মালিকও হয়েছেন।
‘আমরা এখন আত্ম-সমালোচনা করছি। যেসব ভুল আমরা করেছি, সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন সামনে এগুতে চাই,’ বলছিলেন নাছিম।
এক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতি, জমি দখল, অর্থপাচারসহ অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
‘আওয়ামী লীগ সবসময়ই এগুলো বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে ছিল, থাকবে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটা দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে,’ বলেন নাছিম।
‘আত্মগোপনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে’
গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা আকস্মিকভাবে ভারতে চলে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রীতিমত দিশেহারা হয়ে পড়েন।
এর মধ্যেই বিভিন্ন স্থানে দলটির কার্যালয়, নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটতে থাকে।
ফলে জীবন ‘বাঁচাতে’ আত্মগোপনে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না বলে জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
‘আমাদেরকে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। যেভাবে হামলা ও হত্যা করা শুরু হয়েছিল, তাতে আত্মগোপনে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না,’ বলছিলেন নাছিম।
গত তিন মাসে ‘আত্মগোপনে’ থাকা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন। কেউ কেউ দেশও ছেড়েছেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুই শতাধিক মামলা হয়েছে, যেগুলোর বেশিরভাগই হত্যা মামলা।
একইভাবে, দলটির অন্যান্য নেতাকর্মীদেরকেও অসংখ্য মামলায় আসামি করা হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে।
‘আমাদের নেত্রীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দেওয়া হয়েছে,’ বিবিসি বাংলাকে বলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
জুলাই থেকে গত চার মাসে হামলায় দলটির কয়েকশ নেতাকর্মী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ।
‘ইতোমধ্যেই আহত-নিহতদের তথ্য সংগ্রহ আমরা শুরু করেছি,’ বলেন চৌধুরী।
সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দিয়ে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বাতিল করা হয়েছে ১৫ আগস্টের শোক দিবস, সংবিধান দিবসসহ জাতীয় আটটি দিবস।
এখন ‘গণহত্যার’ অভিযোগে আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ অন্য নেতাদের বিচার করার উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। এমনকি দল হিসেবে আওয়ামীকে নিষিদ্ধও করারও দাবি করছেন অনেকে।
‘এগুলোর সবই ষড়যন্ত্রের অংশ,’ বলছিলেন চৌধুরী।
আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যেইএসব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
‘অতীতেও এমন চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কেউ আওয়ামী লীগকে দাবাতে পারেনি, এরাও পারবেন না,’ বলেন চৌধুরী।
বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টা
৫ আগস্টের পর নেতারা ‘আত্মগোপনে’ চলে যাওয়ায় নেতৃত্বশূন্যতায় চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল আওয়ামী লীগ।
তিন মাস পর সেই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে দলটি। দেশে-বিদেশে ‘আত্মগোপনে’ থাকা নেতাদের মধ্যে যোগাযোগের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
‘নিয়মিতভাবেই এখন আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে, আলাপ-আলোচনা হচ্ছে,’ বলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এমনকি তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার একাধিক ফোনালাপও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। যদিও ফোনালাপগুলোর আসল কি না, বিবিসির পক্ষে স্বাধীনভাবে সেটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
তবে দলীয় সভাপতির সঙ্গে যে যোগাযোগ হচ্ছে, সেটি অবশ্য স্বীকার করছেন নেতারা।
‘শুধু নেতাদের সঙ্গেই না, সাধারণ কর্মী ও মানুষের সঙ্গেও আমাদের নেত্রীর যোগাযোগ রয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি আলাপ-আলোচনা করছেন এবং নির্দেশেনা দিচ্ছেন,’ বলেন চৌধুরী।
মূলত দলের ‘দিশেহারা’ নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করে ‘বিপর্যস্ত’ আওয়ামী লীগকে ফের সংগঠিত করার উদ্দেশ্যেই শেখ হাসিনা সরাসরি কথা বলছেন বলে জানাচ্ছেন তার দলের নেতারা।
একইসঙ্গে, দলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলেও এখন আওয়ামী লীগকে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে।
সূত্র: যুগান্তর