রাজশাহীতে ২৪ ঘন্টায় ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টি, ভোগান্তি চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উত্তর বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে গতকাল শুক্রবার থেকে টানা ঢাকাসহ সারা দেশে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৯৫ মিলিমিটার ছাড়াও দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে গোপালগঞ্জে ১৪৩ মিলিমিটার। রাজশাহীতে ২৪ ঘন্টায় হয়েছে ৯১ দশমিক ৯ মিলিমিটার। আজ সকাল ছয়টার পর থেকে হয়েছে আরো ২১ দশমিক ৬ মিলিমিটার।

এদিকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবনে পড়েছে বিরূপ প্রভাব। নাকাল হচ্ছেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ।

আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ শনিবারও দিনের অধিকাংশ সময় বৃষ্টি ঝরবে। ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে সারা দেশেই। সমুদ্র বন্দরগুলোতে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। তবে বিকেলে বৃষ্টিপাত কমে যাবে।

এ প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদ নিঝুম রোকেয়া আহমেদ জানান, উপকূলীয় উড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপের কারণে শনিবার দুপুর পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

এদিকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ঢাকার মিরপুর, শান্তিনগর, মালিবাগ, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় পানি জমে যান চলাচল বিঘ্ন ঘটে।

আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান জানান, নিম্নচাপটি আরও উত্তর/উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে।

নিম্নচাপের কারণে এখনও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেঝে, নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এ ছাড়াও অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। একইসঙ্গে আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, কাল শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে আজ শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ৯১ দশমিক ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শনিবার সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত হয়েছে আরও ২১ দশমিক ৬ মিলিমিটার। আজ সারাদিন আবাহাওয়া প্রায় একই থাকবে। সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করবে। কাল রবিবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।

স/ আর